কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং ও ভিসার দাম কত
কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং বা কম্বোডিয়া ভিসা আবেদন পদ্ধতি অথবা কম্বোডিয়া ই-ভিসা প্রসেসিং প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানুন আজকের পোস্টে। এ ছাড়াও জানবেন কম্বোডিয়া ভিসার দাম কত। কম্বোডিয়া দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত একটি দেশ। কম্বোডিয়ার বৃহত্তম নগরী বা রাজধানী নমপেন।
কম্বোডিয়া অনলাইন কোম্পানি গুলোতে কম্পিউটার অপারেটরদের বেতন মাসিক ৮০ হাজার থেকে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই অতিরিক্ত বেতনের সুবিধা দেখে বাংলাদেশ থেকে অনেকে কম্বোডিয়া যেতে চান এবং জানতে চান কিভাবে কম্বোডিয়া ই-ভিসা প্রসেসিং করব। তাই আজকের পোস্টে তাদের জন্য কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং প্রক্রিয়া শেয়ার করা হলো।
কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং/কম্বোডিয়া ই-ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
অনলাইনে কম্বোডিয়া ই ভিসা আবেদন করার জন্য প্রথমে ফোন বা কম্পিউটারের যেকোন ব্রাউজার ওপেন করুন এবং সার্চ বারে Cambodia e visa application লিখে সার্চ করুন। তাহলে আপনার সামনে অনেক গুলো ওয়েবসাইট প্রদর্শিত হবে।
এখন সেখান থেকে প্রথম ওয়েবসাইট eVisa Kingdom of Cambodia (Official…) সাইটে প্রবেশ করুন অথবা এখানে ক্লিক করুন। নিচের মতো একটি ইন্টারপেইজ দেখতে পাবেন।
এখন একটু নিচের দিকে আসলে Apply now অপশন দেখতে পাবেন। মূলত ৩টি ধাপে কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং বা আবেদন করতে হবে।
- Apply
- Pay
- Download
এখন আবেদন শুরু করতে ‘Apply now’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে একটি ক্যাপচা আসবে সেটি সঠিকভাবে বসিয়ে ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে হবে। ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাওয়া হবে।
কম্বোডিয়া ভিসা আবেদন করার গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস সমূহ
কম্বোডিয়া ই ভিসা আবেদন করার জন্য অবশ্যই কিছু ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে যেমন:
- বৈধ পাসপোর্ট
- ১ কপি রঙ্গিন ছবি
- হোটেল বুকিং কপি
- এয়ার টিকেট
কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং প্রথম ধাপ
শুরুতে আপনাকে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। Apply Now তে ক্লিক করে ক্যাপচা পূরণ করার পর আপনাকে এরকম একটি পেইজে নিয়ে আসা হবে।
যেখানে পাসপোর্ট অনুযায়ী যাবতীয় তথ্য দিয়ে ফর্মটি পূরণ করতে হবে। যেমন:
- Attached passport (পাসপোর্টের ১ম ও Information পেইজ একসাথে স্ক্যান করে স্ক্যান কপি যুক্ত করতে হবে)
- Upload image
- Surname
- Given Name
- Telephone
- Retype Email
- Gender
- Date of Birth
- Country of Nationality
- Residential address
- State
- Address in Cambodia ইত্যাদি
এছাড়াও পাসপোর্ট সম্পর্কিত আরোও কিছু তথ্য দিতে হবে যেমন:
- Passport number
- Passport date of Issue
- Passport Expiry date
- Country of passport and
- Travel details
ট্রাভেল ডিটেলস এর ক্ষেত্রে আপনার Travel type এর উপর নির্ভর করে কম বেশি টাকা প্রয়োজন হতে পারে। তবে টুরিস্ট দিলে মোটামুটি ৩০$-৪০$ ডলার বা বাংলা টাকায় ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ হাজার টাকা পে করতে হবে। ডলার Pay করার জন্য অব্যশই আপনার কাছে Dual Currency supported Visa বা Mastercard প্রয়োজন হবে। সবগুলো তথ্য ভালোভাবে পূরণ করে নিচে থেকে Next বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাওয়া হবে।
Next অপশনে আসার পর আপনার সামনে আপনার দেওয়া তথ্য গুলো আরোও একবার প্রদর্শিত হবে। এখন সবগুলো তথ্য ভালোভাবে Review করে নিন। যদি তথ্য গুলো ঠিক থাকে তাহলে আবারও Next বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পেমেন্ট পেইজে নিয়ে যাওয়া হবে।
কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং দ্বিতীয় ধাপ
এই ধাপে আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে। আপনার ভিসার উপর নির্ভর করে আপনার পেমেন্ট ও কম বেশি হতে পারে। এখন Visa বা Mastercard থেকে পরিমান মতো টাকা পেমেন্ট করে দিন। পেমেন্ট সম্পন্ন হলে আপনার জিমেইলে একটি কনফার্মেশন মেইল চলে যাবে।
কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং তৃতীয় ধাপ
এই ধাপ হলো সর্বশেষ ধাপ। এই ধাপে তারা আপনার সম্পূর্ণ তথ্য গুলো যাচাই বাছাই করে আপনাকে মেইলের মধ্যমে ভিসা পাঠিয়ে দিবে। আপনি সেটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে ব্যবহার করতে পারবেন। এই ছিল মোটামুটি অনলাইনে কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং পদ্ধতি। এই নিয়মটি ফলো করে আপনি নিজে নিজে কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং করতে পারবেন।
কম্বোডিয়া ভিসার দাম কত?
কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং জানার পর এবার জানবো কম্বোডিয়া ভিসার দাম। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বা যে কোন প্রয়োজনে কম্বোডিয়া যাওয়ার পূর্বে কম্বোডিয়া ভিসার দাম সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। কম্বোডিয়া ভিসার চাহিদা দেখে বিভিন্ন দালাল বা এজেন্সি ভিসা প্রসেসিং এর জন্য অতিরিক্ত অর্থ দাবি করে থাকে। তাই আপনার যদি কম্বোডিয়া ভিসার সঠিক মূল্য জানা থাকে তাহলে আপনি খরচের ব্যাপারে সচেতন হতে পারবেন।
সাধারণত বিভিন্ন এজেন্সি বা দালাল কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং এর জন্য ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চার্জ করে থাকে। যেটা সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক মূল্য। তাই আপনি যদি বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং ফি ও কম্বোডিয়া আসার সঠিক প্রন্থা সম্পর্কে জানেন তাহলে আপনাকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে না।
বৈধ উপায়ে কম খরচে বাংলাদেশ থেকে কম্বোডিয়া আসার জন্য প্রথমে আপনাকে কম্বোডিয়া এম্বাসি থেকে ভিসা গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশে কোন কম্বোডিয়া এম্বাসি বা দূতাবাস নেই। কিন্তু আমাদের নিকটস্থ্য দেশ ভারতে কম্বোডিয়া দূতাবাস রয়েছে। এছাড়াও মালয়েশিয়া, চায়না, ভিয়েতনাম সহ আরোও অনেক দেশে কম্বোডিয়া এম্বাসি রয়েছে। তাই আপনাকে প্রথমে এসব দেশ থেকে কম্বোডিয়া সিঙ্গেল ভিসা এন্ট্রি নিতে হবে।
ভিসা গ্রহণের ৩ মাসের মধ্যে আপনাকে কম্বোডিয়া ভ্রমণ করতে হবে। এ ভিসা গ্রহণ করতে সর্বোচ্চ ২৫০-৩০০$ পর্যন্ত ব্যয় হতে পারে। যেটা বাংলাদেশি টাকায় ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা। তারপর বাংলাদেশ সরকারের বিদেশি কর্মীদের জন্য যেসব ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে সে সব ট্রেনিং সেন্টার থেকে ৩ দিনের ট্রেনিং নিতে হবে।
তারপর বায়োমেট্রিক্স বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট এন্ট্রি করাতে হবে। এর জন্য সরকার নির্ধারিত খরচ ২৫০-৫০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। তবে মাঝে মাঝে সরকারি কর্মকর্তারাও অতিরিক্ত টাকা চার্জ করে থাকে। সেক্ষেত্রে কিছুটা বেশি অর্থ প্রয়োজন হবে।
এরপর আপনার হয়ে বাংলাদেশ সরকার এর রিক্রুটিং এজেন্সি Man power কার্ড গ্রহণ করে থাকবে এর জন্য বাংলাদেশ সরকারের নির্ধারিত মূল্য ৪,৫০০-৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে সরকারি তত্ত্বাবধায়ন না থাকায় এ কার্ড গ্রহণের জন্য আপনাকে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হবে।
কার্ড গ্রহণের পর আপনাকে বিমানের টিকেট ক্রয় করতে হবে। আপনি যদি মালয়েশি এয়ারলাইন্স থেকে টিকেট ক্রয় করেন তাহলে আপনাকে যাওয়া এবং আসার টিকেট একসাথে ক্রয় করতে হবে। যার জন্য ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হবে। এরপর কম্বোডিয়া আসার জন্য কম্বোডিয়া ইমিগ্রেশন অফিস থেকে এয়ারপোর্ট এডমিশন লেটার গ্রহণ করতে হবে। এডমিশন লেটার গ্রহণ করার জন্য ৮০০$ থেকে ৯০০$ ডলার বা ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে কম্বোডিয়া আসার পর এক বছর মেয়াদি মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা করতে হবে। যার জন্য ৩৫০$-৪০০$ ডলার খরচ হতে পারে। সর্বশেষ কম্বোডিয়া কাজ করার জন্য ওয়ার্ক পারমিট লাগাতে হবে যার জন্য আরোও ২০০$ থেকে ৩০০$ ডলার প্রয়োজন হবে। এর বাহিরে অন্যান্য খরচ বাবদ আরোও কিছু টাকা প্রয়োজন হবে। সব মিলে ২ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত কম্বোডিয়া আসতে প্রয়োজন হবে।
আশাকরি, আজকের পোস্টটি পড়ে আপনি কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং ও কম্বোডিয়া ভিসা খরচ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এরকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।
আরো জানুনঃ
কানাডা ভিজিট ভিসা প্রসেসিং টাইম।
মোবাইলে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক করার নিয়ম।