পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করুন সহজে।

শেয়ার করুন

অনলাইনে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করুন খুব সহজে। মাত্র কয়েকটি সহজ ধাপে আবেদন করতে পারবেন পল্লী বিদ্যুৎ মিটারের জন্য। নিম্নে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন পদ্ধতি, শর্ত, ফি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলে।

এখন থেকে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করতে সরাসরি অফিসে যেতে হবে না। বাসায় বসে মোবাইল কিংবা কম্পিউটারের সাহায্যে আবেদন করা যাবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক অনলাইনে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করান নিয়ম ও প্রয়োজনীয় শর্তাবলী সম্পর্কে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ বাস্তবায়নের লক্ষে চালু হলো অনলাইন পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন ২০২৩। মাত্র কয়েকটি সহজ ধাপে যেকেউ পল্লী বিদ্যুৎতের নতুন মিটারের জন্য আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদনের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে আপনার ঘরে। শহর কিংবা গ্রাম যেকোন জায়গায় বসে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করা যাবে অনলাইনে।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করার নিয়ম

অনলাইনে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করার পূর্বে নিচে থেকে পল্লী বিদ্যুৎ আবেদনের শর্ত ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সম্পর্কে জেনে নিন। তারপর ফোনের ইন্টারনেট সংযোগ অন রেখে যেকোন ব্রাউজারের এড্রেসবারে www.rebpbs.com লিখে সার্চ করুন। তাহলে আপনি পল্লী বিদ্যুৎতের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে পৌঁছে যাবেন।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন।

এখন উপরের মেনুবার থেকে “আবেদন” অপশনে ক্লিক করুন। মনে রাখবেন আপনাকে অবশ্যই সকাল ৮ টা থেকে রাত ১০ টার মধ্যে আবেদন করতে হবে। অন্যথায় আবেদন করা যাবে না। আবেদন অপশনে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনার সামনে একটি আবেদন ফর্ম খুলে যাবে। সেখানের তথ্য গুলো খুব ভালোভাবে পড়ে বুঝে পূরণ করতে হবে। অবশ্যই লাল * চিহ্নিত অপশন গুলো পূরণ করতে হবে। যেমন:

  • সমিতির নাম
  • জোনাল অফিস
  • সংযোগের ট্যারিফ
  • আবেদনকারীর নাম (বাংলা)
  • পিতার নাম (বাংলা)
  • মাতার নাম (বাংলা)
  • স্বামী বা স্ত্রীর নাম (বাংলা)
  • জন্ম তারিখ (ইংরেজি)
  • জাতীয় পরিচপত্র নম্বর (ইংরেজি)
  • জাতীয়তা
  • লিঙ্গ
  • মোবাইল নম্বর (ইংরেজি)
  • জেলা
  • উপজেলা
  • থানা
  • ইউনিয়ন
  • গ্রাম
  • মৌজা
  • জমির মালিকানা ধরণ
  • জমির আইনগত মালিক
  • নিকটবতী সার্ভিস পোল হইতে দূরত্ব (ইংরেজি)।
  • একই ট্রান্সফরমারের আওতায় পার্শ্ববর্তী গ্রাহকের বই নং দিতে হবে (ইংরেজীতে)।
  • হিসাব নম্বর( ইংরেজিতে)।
  • ছবি (সর্বোচ্চ সাইজ(300×300) 150 kb
  • জাতীয় পরিচয় পত্র সর্বোচ্চ সাইজ(600×475) 300 kb
  • খারিজ (জমির মালিকানা পর্চা) সর্বোচ্চ সাইজ 700 kb এবং নিজে জমির মালিক না হলে ওয়ারিশ সূত্রে উত্তরাধীকার সনদ আপলোড করুন। একের অধিক ডকুমেন্ট থাকলে PDF ফাইল আপলোড করুন।

উপরোক্ত তথ্য গুলো জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী সঠিকভাবে বসিয়ে নিচে থেকে পল্লী বিদ্যুৎ পরিষেবার শর্তাবলীর সাথে একমত পোষণ করে। ক্যাপচা পূরণ করে “সংরক্ষন করুন” বাটনে ক্লিক করুন।

তাহলে আপনার আবেদনটি সংরক্ষন হয়ে যাবে এবং আপনার আইডি নম্বর পাসওয়ার্ড দেখতে পাবেন। স্কিনশর্ট দিয়ে সেটি সংরক্ষন করুন। তারপর নিচের দিকে স্ক্রোল করুন। তাহলে ডাউনলোড অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করে আবেদনটি ডাউনলোড করে নিন।

নোট: যারা রাজশাহী পবিস ও যশোর পবিস-১ অধীনে আছেন তারা https://newconnection. rebpbs.com এই ঠিকানায় গিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করবেন। বাকি অন্য জেলার মানুষদের জন্য উপরোক্ত নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

ওয়্যারিং রিপোর্ট ও হাউস ওয়্যারিং রিপোর্ট সাবমিট

আপনি চাইলে সরাসরি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে ওয়্যারিং রিপোর্ট সাবমিট করতে পারবেন। এছাড়াও অনলাইনে ওয়্যারিং রিপোর্ট সাবমিট করা যাবে। অনলাইনে ওয়্যারিং রিপোর্ট সাবমিট করতে পর্বের মতো পল্লী বিদ্যুৎ অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে চলুন আসুন। তারপর মেনুবার থেকে “আবেদন” অপশনে ট্যাপ করে ধরুন। আরো কতগুলো অপশন দেখতে পাবেন। আর কম্পিউটার থেকে আবেদন করলে “আবেদন’ লেখার উপর মাউস ধরলে অপশন গুলো দেখতে পাবেন।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন

এখন অপশন গুলো থেকে “হাউস ওয়্যারিং নিশ্চিত করুন” অপশনে ক্লিক করুন। আপনি নতুন আরেকটি ফর্ম পাবেন। এখন ফোন/কম্পিউটার থেকে আপনার ডাউনলোড কৃত আবেদনপত্রটি ওপেন করুন। সেখানে ট্রাকিং নম্বর ও একটি পাসওয়ার্ড দেখতে পাবেন। সেটি দুটি ফর্মে বসিয়ে দিন। তারপর নিচে থেকে “হাউস ওয়্যারিং সম্পন্ন হয়েছে সিলেক্ট করুন। এবং মেমো নম্বর (যে দোকান থেকে ওয়্যারিং পণ্য ক্রয় করেছেন। সেখান থেকে মেমো সংরক্ষন করুন। সেখানে মেমো নম্বর দেখতে পাবেন) বাড়ির ধরণ (টিন সেট বা বিল্ডিং) ইলেকট্রিশিয়ানের নাম ও মোবাইল নম্বর দিয়ে নিচে থেকে মেমো ছবি আপলোড করুন।

সবগুলো অপশন পূরণ হলে ভালোভাবে চেক করে নিন। তারপর নিচে থেকে ক্যাপচা পূরণ করে “সম্পূর্ণ করুন” বাটনে ক্লিক করুন। আপনার আবেদনটি চুড়ান্তভাবে সাবমিট হয়ে যাবে এবং আপনি SMS এ মিটার ফি এমাউন্ট ও পরিশোধ তারিখ দেখতে পাবেন। এমাউন্ট পরিশোধের পর ১/২ সাপ্তহের মধ্যে আপনি মিটার পেয়ে যাবেন। তবে দ্রুত মিটার চাইলে উপরোক্ত আবেদন ফর্ম নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করুন। তাহলে দ্রুত মিটার পেয়ে যাবেন।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন ফি পরিশোধের নিয়ম

ফর্ম পূরণের পর ২ কর্ম দিবসের মধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ আবেদন ফি/জামানত ফি পরিশোধ ব্যতিত আপনি নতুন সংযোগ পাবেন না। তাই অবশ্যই আবেদন ফি/জামানত পরিশোধ করুন। আবেদন ফি/জামানত ফি পরিশোধের নিয়ম:

রকেট মোবাইল ব্যাংককিং এ পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন ফি ও জামানত পরিশোধ করতে প্রথমে রকেট অ্যাপে লগইন করুন। তারপর হোম পেইজ থেকে Bill pay অপশনে ক্লিক করুন এবং উপরের সার্চবারে 477 লিখে সার্চ করুন আপনি পল্লী বিদ্যুৎ বিল পে অপশন পেয়ে যাবেন। এখন আপনার SMS এ আসা বিল নং ও ট্রাকিং আইডি বসিয়ে “পরবর্তী অপশনে” ক্লিক করুন। আপনার মোট টাকার পরিমান দেখতে পাবেন। এখন Ok দিয়ে আপনার রকেট পিন দিয়ে পেমেন্ট কনফর্ম করুন।

অনলাইন বিলিং ডাটা সাবমিট করুন

রকেট একাউন্ট দিয়ে বিল পরিশোধের পর এখন সেই তথ্য ওয়েবসাইটে সাবমিট করতে হবে। ওয়েবসাইটে তথ্য সাবমিট করতে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসিয়াল ওয়েবসাইট  www.rebpbs.com  চলে আসুন। মেনুবার থেকে জামানত ও ফি জমা অপশনে ক্লিক করুন। তারপর আবেদনপত্র থেকে ট্রাকিং নম্বর ও পিন নম্বর দিয়ে সাবমিট করুন।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন

আপনি আপনার একাউন্টে চলে আসবেন। এখন একটু নিচে আসলে ফি প্রদান পদ্ধতি ফর্ম দেখতে পাবেন। এ পর্যায়ে ফর্মটি খুব সুন্দর করে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। যেমন:

  • পেমেন্টের উদ্দেশ্য (আবেদন ফি/জামানত ফি) সিলেক্ট করুন।
  • রকেট ট্রান্সেজেকশন আইডি (পেমেন্ট পরিশোধের পর SMS এ জানতে পারবেন।
  • ট্রান্সকশন তারিখ (যেই তারিখে পেমেন্ট করেছেন)।
  • টাকার পরিমান (কত টাকা পেমেন্ট করেছেন)।
  • রেফারেন্স নম্বর/বিল নম্বর (SMS এ দেখতে পাবেন) ।

সবগুলো তথ্য বসানোর পর “সংরক্ষন করুন” বাটনে ক্লিক করুন। আপনার বিল পে সম্পন্ন হবে। এখন ওয়েবসাইটের হোম পেইজ থেকে “আবেদন” অপশনে ট্যাপ করে ধরুন। তারপর “আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা” অপশনে ক্লিক করে আবেদনটি চেক করে নিন। সব ঠিক থাকলে অফিস থেকে লোক এসে আপনার নতুন মিটারের সংযোগটি প্রদান করবেন।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদনের শর্তাবলী

পল্লী বিদ্যুৎতের আবেদনের পূর্বে সকলের নিন্ম লিখিত শর্ত সুমুহ জানা উচিত। অন্যথায় বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে সমস্যা হতে পারে। শর্ত গুলো হলো:

  • পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করার সময় ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংযোগস্থলের খারিজের (জমির মালিকানা পর্চা) স্ক্যান (Scan) কপি সংযুক্ত করতে হবে।
  • সার্ভিস ড্রপের দুরত্ব সংযোগস্থল হইতে 130 ফুটের মধ্যে হতে হবে।
  • আবেদনের সময় হাউস ওয়্যারিং রিপোর্ট নিশ্চিত করতে হবে।
  • সঠিকভাবে মেপে সার্ভিস ড্রপের দুরত্ব প্রদান করতে হবে। সার্ভিস ড্রপের দুরত্ব সঠিক না হলে তারের দৈর্ঘ্য কম/বেশি হলে বা ভুল তথ্য দিলে পরবর্তীতে সংযোগ পেতে বিলম্ব হতে পারে।
  • মনে রাখবেন, আপনার বাসায় মোট বিদ্যুৎতের লোড 80 কিলোওয়াট এর বেশি হলে এটি এইচটি (HT) সংযোগের নিয়মাবলী প্রযোজ্য হবে। তাই HT সংযোগের জন্য আবেদন করুন।
  • অনলাইনে সার্ভে( Survey)করার পর প্রয়োজনীয় অর্থ যেমন: মেম্বারশীপ ফি, আবেদন ফি ও নিরাপত্তা জামানত জমাদান সহ সকল নির্দেশনা এসএমএস (SMS) এর মাধ্যমে আপনাকে জানানো হবে।

শেষ কথাঃ

শর্তাবলী গুলো দেখে পড়ে বুঝে তারপর আবেদন করুন। আবেদন ভুলে হলে/ সংযোগ পেতে দীর্ঘদিন দেরি হলে নিকটস্থ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করুন। আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। এরকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে। ধন্যবাদ!

আরো জানতে পড়ুনঃ

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন অনুসন্ধান ২০২৪

পল্লী বিদ্যুৎ বিল চেক অনলাইনে। 

NESCO বিদ্যুৎ বিল চেক ও পরিশোধের নিয়ম।

 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *