ফাইবারে ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে ১০ লাখ টাকা ইনকাম।

শেয়ার করুন

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত একটি ক্যারিয়ার ফ্রিল্যান্সিং। যেটি অন্যসব ক্যারিয়ার থেকে একদমই ভিন্ন। আপনি যদি মনে করেন ফাইবারে ফ্রিল্যান্সিং করে আপনার ক্যারিয়ার গড়ে তুলবেন এবং প্রত্যেক মাসে কমপক্ষে 1 লক্ষ 2 লক্ষ অথবা এর চেয়ে বেশি টাকা ইনকাম করবেন।

তাহলে আপনার জন্য রয়েছে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আলোচিত ও ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাটফর্ম ফাইবার, আপওয়ার্ক ও ফ্রিল্যান্সার ইত্যাদি।আপনি এখান থেকে যে কোন একটি প্লাটফর্মে অথবা একের অধিক প্ল্যাটফর্মে আপনার ফ্রিল্যান্সিং এর যাত্রা শুরু করতে পারেন।

মূলত ঘরে বসে ইন্টারনেট চালিত ডিভাইস ব্যবহার করে বাহিরের কাজ করে দেওয়ার নামেই ফ্রিল্যান্সিং। অর্থাৎ আপনি বাংলাদেশের একজন নাগরিক হয়েও খুব সহজে কম্পিউটার, ডেক্সটপ অথবা ল্যাপটপের সাহায্যে যুক্তরাষ্ট্রের/যে কোন দেশের কোন ব্যক্তির কাজ করে দেওয়ার নামই ফ্রিল্যান্সিং।

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন ?

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা একদমই সহজ। কিন্তু তার চেয়ে বেশি জরুরি হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং শেখা বা স্কিল ডেভেলপমেন্ট করা। আপনি চাইলে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন। যেমনঃ

  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
  • ডিজিটাল মার্কেটিং
  • কন্টেন্ট রাইটিং
  • ভিডিও এডিটিং
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)
  • কপিরাইটর
  • ফটোগ্রাফার
  • প্রোগ্রামার
  • ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
  • মিউজিক বিল্ডার
  • ভয়েস ওভার

উপরিউক্ত বিষয় গুলো হলো ফ্রিল্যান্সিং এর অনেকগুলো ক্যাটাগোরি কিন্তু এগুলোর আন্ডারে অনেক গুলো সাব-ক্যাটাগোরি ও রয়েছে যেমন:

গ্রাফিক্স ডিজাইন কি?

গ্রাফিক্স ডিজাইন হলো ডিজাইন রিলেটেড জব অর্থাৎ ব্যক্তিগত চিন্তা শক্তি দিয়ে বিভিন্ন ধরণের ছবি, থামনেইল, ওয়েবসাইট, অ্যাপ, গেমস ইত্যাদির একটি সুন্দর সাজানো অবকাঠামো তৈরি করা। যার মধ্যে অনেক গুলো সাব-ক্যাটাগোরি রয়েছে। যেমন:

  • ওয়েব ডিজাইন
  • ছবি ডিজাইন
  • ব্যানার ডিজাইন
  • লোগো ডিজাইন
  • অ্যাপ ডিজাইন
  • গেমস ডিজাইন
  • টি-শার্ট ডিজাইন
  • এডস ডিজাইন
  • শো ডিজাইন
  • প্রাডাক্ট ডিজাইন ইত্যাদি।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি?

যে কোনো ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং ভাষার সাহায্যে ফাংশন ও পেইজ তৈরি করে অনলাইন ভিত্তিক দর্শনযোগ্য সফটওয়্যার তৈরি করাকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বলে।

আপনার যদি প্রোগ্রামিং ভাষা জানা থাকে তাহলে আপনি বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট করতে পারবেন যেমন:

  • টুলস ওয়েবসাইট
  • বিজনেস ওয়েবসাইট
  • মার্কেটপ্লেস ওয়েবসাইট
  • প্রোফাইল ওয়েবসাইট
  • ছবি ডাউন-লোডিং ওয়েবসাইট
  • অনলাইন শপ
  • ব্লগিং ওয়েবসাইট
  • এডুকেশনাল ওয়েবসাইট ও
  • পার্সোনাল ওয়েবসাইট ইত্যাদি।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রকারভেদ

আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইন্টারনেট ভিত্তিক সেবা বা পণ্যের প্রচার-প্রসার ঘটানো। ডিজিটাল মার্কেটিং এর ও অনেকগুলা প্রকার রয়েছে যেমনঃ

  • জিমেইল মার্কেটিং
  • কন্টেন মার্কেটিং
  • ভিডিও মার্কেটিং
  • ভয়েস মার্কেটিং
  • এডস মার্কেটিং
  • অ্যাফিলিয়েটিং
  • সিপিএ মার্কেটিং (Cost for action) ও
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ইত্যাদি।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও হলো কোন ওয়েব পেইজকে এমন ভাবে কাস্টমাইজ বা তৈরি করা যাতে করে ঐ ওয়েব পেইজটি গুগলের ফাস্ট পেজে প্রথমে দেখায়। অনেক ক্ষেত্রে এসইও খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেমন:

  • ওয়েবসাইট এসইও
  • কনটেন্ট এসইও
  • ভিডিও এসইও
  • সোশ্যাল মিডিয়ায় এসইও
  • ব্লগ এসইও ইত্যাদি।

ফাইবার থেকে কিভাবে আয় করবেন ?

অতিরিক্ত ক্যাটাগরি ও সাব-ক্যাটাগরি গুলো ছাড়াও আরো অনেক ক্যাটাগরি ও সাব-ক্যাটাগরি আছে। আপনি যে কোন একটি বিষয়ে অধিক জ্ঞান অর্জন করে যে কোন মার্কেটপ্লেসে কাজ করে খুবই স্টান্ডার একটা আর্নিং করতে পারেন।

আপনি যদি ফাইবার থেকে আয় করতে চান তাহলে প্রথমে যেকোন একটি বা একের অধিক বিষয়ে এক্সপার্ট হোন। তারপর কম্পিউটার, ডেক্সটপ অথবা ল্যাপটপ দিয়ে ফাইবারে একটি একাউন্ট তৈরি করে নিন। তারপর ফাইবারের পলিসি মেনে গিগ পাবলিশ করুন। হ্যাঁ এত টুকু কাজ। এখন আপনার গিগ দেখে কোন বায়ার নক দিলে তার সাথে কথা বলে অর্ডার নিয়ে কাজ করে জমা দিন।

ফাইবার থেকে কিভাবে টাকা তুলবো ?

আপনার ফাইবার একাউন্টে যদি ২০$ এর অধিক অর্থ জমা হয় তাহলে আপনি যেকোন ব্যাংক বা পেওনিয়ার বা পেপাল একাউন্ট দিয়েও টাকা তুলতে পারবেন। তবে বাংলাদেশি ক্ষুদ্র ফ্রিল্যান্সারদের কাছে পেওনিয়ার উইথড্র জনপ্রিয় একটি মাধ্যম।

ফাইবার ছাড়াও কি ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করা যায়?

শুধু ফাইবার নয়। যেকোনো মার্কেটপ্লেসে কাজ করা ছাড়াও আপনি ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তার জন্য আপনাকে ভালো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং জানতে হবে। তাহলে আপনি বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া যেমন ফেইসবুক, টুইটার, প্রিন্টারেস্ট ইত্যাদি প্লাটফর্মকে ব্যবহার করে কাজ নিতে পারবেন।

মোবাইল দিয়ে কি ফ্রিল্যান্সিং সম্ভব ?

অধিকাংশ ক্ষেত্রে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করা সম্ভব না। তবে আপনি ইউটিউবিং, ব্লগ রাইটিং সহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোবাইল দিয়ে এটি শুরু করতে পারবেন এবং মাস শেষে বেশ ভালো একটা ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন।

আরোও পড়ুনঃ পেওনিয়ার থেকে বিকাশ বা উপায়ে টাকা আদান প্রদান করুন সহজে।

তবে আপনি মোবাইল দিয়ে কোন কোন বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং করবেন সেটা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করে। আপনি যদি নিজের বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে পারেন তাহলে মোবাইলে এটি করার অনেক গুলা মাধ্যম পেয়ে যাবেন। আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে মাস শেষে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার অধিক ইনকাম করে থাকি। তাই আপনিও পারবেন।

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখব?

ফ্রিল্যান্সিংয়ের শুরুটা আপনি যেকোনো একটি বিষয়ের উপরে কোর্স করে অথবা নিজের প্রচেষ্টায় যে কোন বিষয়ে দক্ষ হয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত টাকা লাগে? বা কত সময় লাগে? এ প্রশ্ন দুইটার উত্তর আমি বলবো এটা সম্পূর্ণ আপনার উপরে নির্ভর করে।

আপনি যদি নিজের প্রচেষ্টায় ফ্রিল্যান্সিং শেখেন তাহলে এক্ষেত্রে আপনাকে কোন ধরনের ইনভেস্ট করতে হবে না কিন্তু আপনি যদি কোন ট্রেনার বা কোর্স থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখেন তাহলে এক্ষেত্রে আপনাকে পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা গুণতে হবে।

আর ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কতটা সময় লাগে সেটা আপনার উপর নির্ভর করে। কারণ আপনি যদি এক মাসে দক্ষ হয়ে ওঠেন তাহলে আপনার জন্য এক মাসে যথেষ্ট। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে এটি দুই মাস থেকে ছয় মাস পর্যন্ত হতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিং শেখার ভালো কোর্স কোথায় পাবো?

আমি ব্যক্তিগত ভাবে কোন কোর্সটা আপনার জন্য ভালো হবে সেটি সরাসরি বলতে চাচ্ছি না। এতে করে অন্য কোর্সগুলোর অধিকার লঙ্ঘন হবে। তাই আমি বলব যে কোর্সটি আপনার জন্য সুবিধাজনক বা সাশ্রয় আপনি সেই কোর্সটি গ্রহণ করতে পারেন।

এছাড়া আপনি চাইলে ইউটিউব দেখে অথবা যে কোন একজন এক্সপার্ট ফ্রিল্যান্সারের পরামর্শক্রমে আপনার পছন্দের কোর্সটি খুজে নিতে পারেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *