সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম কানুন জেনে নিন।
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম কানুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন আজকের পোস্ট। সালাতুল হাজত নামাজ হচ্ছে বিপদকালীন সময়ের নামাজ। হাজত শব্দটি আরবী এর আভিধানিক অর্থ-প্রয়োজন। সালাতুল হাজত এর পরিপূর্ণ অর্থ হচ্ছে প্রয়োজনের নামাজ বা বিপদকালীন নামাজ। আজকের পোস্টে আমরা সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম
সালাতুল হাজত নির্দিষ্ট কোন নামাজ নয়। এটি একটি প্রয়োজনের নামাজ। অর্থাৎ বিভিন্ন প্রয়োজনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম সালাতুল হাজত নামাজ পড়তেন যা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তাই আমরাও বিপদকালীন বা যে কোন প্রয়োজনে এই নামাজ পড়তে পারি। এর জন্য নির্দিষ্ট কোন সময় বা বিধান নেই। মূলত আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনার জন্য এ নামাজ আদায় করা হয়।
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম অন্য সকল সাধারণ নামাজের মতই পড়তে হয়। এর জন্য বিশেষ কোনো সময় বা পদ্ধতির উল্লেখ নেই। তবে তিরমিজি শরীফের একটি বর্ণনায় সালাতুল হাজত নামাজের একটি আলাদা পদ্ধতি তুলে ধরা হয়েছে। যেটি অধিকাংশ মুহাদ্দিসের মতে সহি নয় বা এর সনদ নিয়েও আপত্তি রয়েছে। অধিকাংশ মুহাদ্দিসের মতে এটি একটি দুর্বল হাদিস বা দুর্বল প্রমাণ। নিম্নে সেই পদ্ধতিটি তুলে ধরা হলো:
সালাতুল হাজত নামাজের পদ্ধতি
তিরমিজি শরীফের দুর্বল হাদিসটির বর্ণনা এসেছে আপনি যদি বিশেষ কোনো প্রয়োজনে সালাতুল হাজত নামাজ পড়তে চান, তাহলে প্রথমে উত্তম ভাবে ওযু করে নিন। তারপর সাধারণ নামাজের মত দু’রাকাত নফল নামাজ আদায় করুন। নামাজ শেষে আল্লাহতালার প্রশংসা আদায় ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরুদ পাঠ করে নিচের বিশেষ দোয়াটি পড়ুন।
সালাতুল হাজত নামাজের দোয়া
‘‘ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু হালিমুল কারীম। সুবহানাল্লাহি রব্বিল আরশিল আজিম। আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন। আসআলুকা মুজিবাতি রহমাতিকা অয়া আযা- ইমা মাগফিরাতিকা অয়াল গনিমাতা মিন কুল্লি বিররিউ অয়াস সালামাতা মিন কুল্লি ইসমিন লা তাদালি- যাম্বান ইল্লা অয়াফার তা হু অয়ালা খাম্মান অয়ালা হাম্মান ইল্লা ফাররাজতাহু অয়ালা হাজাতান হিয়া লাকা রিবন ইল্লা কদাইতাহা ইয়া আর হামার রাহিমিন।
দোয়াটির অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই তিনি হালিম তিনি কারীম। তিনি মহান ধৈর্যশীল তিনি মহা করুনার অধিকারী। ওই আল্লাহর পবিত্রতা জ্ঞাপন করছি যিনি মহান আরশের রব এবং পালনকর্তা। প্রশংসা আদায় করছি ওই আল্লাহর যিনি সকল জগত সমূহের পালনকর্তা। হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এমন জিনিস চাই যা আপনার রহমত কে আমার জন্য আবশ্যক করে দেবে।
এবং আপনার ক্ষমা লাভের উপায় আপনার নিকট আশা করছি। সকল ভাল কাজ করার সৌভাগ্য আমি আপনার নিকট আশা করছি এবং সকল ধরনের পাপ থেকে পানাহ চাই। আল্লাহ আপনি আমার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেন এবং আমার সকল পেরেশানি বা দুশ্চিন্তা দূর করে দিন। কল্যাণের সাথে আমার সকল প্রয়োজন পূরণ করে দিন।
যদিও উপরোক্ত হাদীসটি সম্পর্কে অনেক আলেমদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। তবে সহি নিয়ম হচ্ছে উত্তমভাবে অজু করে যে কোন প্রয়োজনে আল্লাহর কাছে দু’রাকাত নামাজ আদায় করে আল্লাহর প্রশংসা আদায় করা এবং নবীর দরুদ পড়ে নিজের মনের চাহিদা গুলো আল্লাহর কাছে উত্তম ভাবে তুলে ধরা।
সালাতুল হাজত নামাজের নিষিদ্ধ সময়
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম কানুন এ এবার জানবো নামাজের নিসিদ্ধ সময় সম্পর্কে। অন্যান্য সালাত যে সময়ে নিষিদ্ধ ঠিক এই নামাজ সেই সময় নিষিদ্ধ। অর্থাৎ সূর্য ওঠার সময় এবং সূর্য ডোবার সময় এই নামাজ পড়া যাবেনা।
সালাতুল হাজত নামাজ সুন্নত নাকি নফল?
অনেকেই জানতে চান, সালাতুন হাজত নামাজ সুন্নত নাকি নফল। আসলে সালতুন হাজত নামাজ এটি নফল নামাজ।
সালাতুল হাজত নামাজ পড়ার সময় কখন?
সূর্য ওঠার সময় এবং সূর্য ডোবার সময় ছাড়া আপনি যেকোন সময়ে এই নামাজ আদায় করতে পারেন।
আশাকরি, আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম কানুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট পেতে onlinesheba24 ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন।
আরো জানুনঃ
মহিলাদের তারাবির নামাজের নিয়ম কানুন