স্মার্টফোনের সেরা ৫টি সিক্রেট টিপস যা আপনার জানা উচিত।
প্রযুক্তির আশীর্বাদে প্রতিনিয়ত আমাদের এই পৃথিবী আপডেট হচ্ছে। প্রতিদিন আবিষ্কৃত হচ্ছে নতুন নতুন সব আধুনিক যন্ত্রপাতি যার মধ্যে স্মার্টফোন অন্যতম। বিশ্বের বড় বড় মোবাইল কম্পানিগুলো তাদের সেবা বৃদ্ধির জন্য স্মার্টফোন গুলোকে প্রতিদিন আপডেট করছে এবং নিয়ে আসছে সবচেয়ে সহজ এবং ব্যবহার উপযোগী প্রযুক্তি। যেটা স্মার্টফোন ব্যবহারকে আরও সহনশীল করেছে।
আজ আমরা স্মার্টফোনের এমন পাঁচটি সিক্রেট টিপস সম্পর্কে জানব। যেটা আপনার স্মার্টফোন ব্যবহারকে আরোও সহজ ও আনন্দদায়ক করে তুলবে।
গুগল ভয়েস টাইপঃ
অনেক নতুন স্মার্টফোন ব্যবহারকারী ভালো করে মোবাইল টাইপিং করতে পারেন না। যার ফলে বন্ধুদের সাথে চ্যাটিংয়ের সময় হিমশিম খেতে হয়। আবার অনেক কনটেন্ট রাইটার দ্রুত টাইপিং না পারার কারণে একটি কনটেন্ট লিখতে ঘন্টার পর ঘন্টা পার করে দেন।
তাই তাদের কথাভেবে গুগল নিয়ে আসল এক অসাধারণ ফিচারস যেটি ব্যবহার করে আপনি ১ মিনিটে ১০০-১৫০ শব্দ টাইপিং করতে পারবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই অসাধারণ ফিচারস সম্পর্কে।
প্রথমে স্মার্টফোনের যেকোন একটি নোডপ্যাড বা Doc ফাইল ওপেন করুন। তারপর কিবোর্ড অপশনে ক্লিক করে Google voice typing সিলেক্ট করুন। এরপর ডান পাশের সেটিং আইকনে ক্লিক করুন।
তারপর Language এ ক্লিক করে আপনার পছন্দের ভাষা সিলেক্ট করে নিন। ব্যাচ,এখন থেকে আপনি Google voice typing কিবোর্ড ব্যবহার করে যা কিছু মুখে বলবেন সব কিছু Text হয়ে যাবে। এটি ব্যবহার করে ১ মিনিটে ১০০-১৫০ ওয়ার্ড লিখতে পারবেন।
Device hide folder:
একটি মোবাইল ফোনে ব্যক্তিগত অনেক কিছু থাকতে পারে যেমন: গান, ভিডিও, অডিও, ছবি, ডকুমেন্ট ইত্যাদি। অনেক সময় এসব বিষয় নিয়ে আমাদের খুব বেশি চিন্তিত হতে হয়। কারণ কেউ যদি আমাদের এই গোপন তথ্য গুলো দেখে নেয় তাহলে আমাদের ক্ষতি হতে পারে।
আর এই কথা ভেবে আমরা মোবাইলে বিভিন্ন থার্ডপার্টি কম্পানির Gallery hide অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করি। যেটা মোটেও সিকিউর না। অর্থাৎ এসব থার্ডপার্টি অ্যাপ যেকোন মুহুর্তে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গুলো নিয়ে আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে।
আরোও পড়ুনঃ নষ্ট অ্যান্ড্রয়েড ফোনের অসাধারণ পাঁচটি ব্যবহার টিপস।
তাই এসব কথা ভেবে মোবাইল কম্পানিগুলো তাদের প্রত্যেকটি ডিভাইসে একটি করে Hide folder ফিচারস চালু করেছে। আপনি চাইলে সেটি ব্যবহার করে আপনার গ্যালারি থেকে যেকোন ধরণের তথ্য, ভিডিও, অডিও, গান, ভয়েস, ডকুমেন্ট ইত্যাদি Hide folder এ সরিয়ে Pin কোড দিয়ে লক করে রাখতে পারবেন। কেউ আপনার এসব তথ্য সহজে খুঁজে পাবে না।
যেভেবে Hide folder ব্যবহার করবেন
এই ফিচারসটি যেহেতু সব মোবাইলেই রয়েছে তাই এর জন্য আপনাকে আলাদা করে আর কিছুই করতে হবে না। আপনি আপনার ফোনের File manager থেকে যেসব তথ্য সরাতে চান সেসব তথ্য সিলেক্ট করে ওপরের ডান পাশের 3 ডট বাটনে ক্লিক করুন।
তারপর অনেক গুলো অপশন দেখতে পাবেন সেখান থেকে Move to safe folder এ ক্লিক করলে সিলেক্টকৃত সকল ডকুমেন্ট গ্যালারি থেকে সেফ ফোল্ডারের চলে যাবে। এখন যেকেউ চাইলে এই ফোল্ডার খুলে আপনার তথ্য দেখতে পারবে না।
আবার আপনি যদি Safe করা ডকুমেন্ট গুলো দেখতে চান তাহলে ফাইল মেনেজারের একটু নিচে গেলেই Safe folder দেখতে পাবেন।
সেখানে ক্লিক করে আপনি একটি পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রবেশ করলে সেটি সেভ হয়ে যাবে। পরবর্তীতে এই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সকল তথ্য দেখতে পাবেন।
আপনি যদি চান Safe folder টি Hide করে রাখবেন। তাহলে Collections এর ডানপাশে 3 ডট এ ক্লিক করে safe folder hide ও unhide করতে পারবেন।
ডিভাইস লোকেশন ট্র্যাকঃ
অনেক সময় ভুল বশত আমরা আমাদের স্মার্টফোনটিকে বিভিন্ন জায়গায় রেখে চলে আসি বা হারিয়ে ফেলি অথবা শখের ফোনটি চুরি বা ছিনতাই হয়ে যায়। তখন সেই ফোনটি খুঁজে পাওয়া অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। মানুষের এমন সমস্যার কথা বিবেচনা করে গুগল Find my device অপশন নিয়ে এসেছে। এটির সাহায্য আপনি আপনার হারানো ফোনটির লোকেশন খুব সহজে বের করতে পারবেন।
যেভাবে সেটাপ করবেন
প্রথমে আপনার ফোনের সেটিং অপশনে চলে আসুন। তারপর সার্চ অপশনে Find my device লিখে সার্চ করুন। তারপর Find my device সেটিং এ ঢুকে সেটিংটি অন করে দিন। এর পর Find my device get in google play অপশনে ক্লিক করুন।
ক্লিক করার পর আপনাকে গুগল প্লেস্টোরে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে Find my device একটি অ্যাপ দেখতে পাবেন। অ্যাপটি ইন্স-টল করে নিন। তারপর ওপেন করুন।
অ্যাপটাতে আপনার জিমেইল দিয়ে লগিং করলে আপনি আপনার ডিভাইসের লোকেশন দেখতে পাবেন। পরবর্তীতে আপনার ফোনটি হারিয়ে গেলে অন্য ডিভাইসে Find my device অ্যাপটি ইন্স-টল করে পুরনো জিমেইলটি সেটাপ দিলে হারানো ফোনের লোকেশন দেখতে পাবেন।
আপনি চাইলে একটি ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার হারানো ফোনকে হাতে থাকা ফোনটি দিয়ে লক করে দিতে পারেন। এমনি করে আপনি খুব নিরাপদে ও দ্রুততার সাথে আপনার হারানো ডিভাইসটি খুঁজে পেতে পারেন।
স্মার্টফোন রিসেট ফিচারসঃ
আপনি যদি একজন নিয়মিত মোবাইল ফোন ইউজার হয়ে থাকেন। তাহলে আপনি অবশ্যই খেয়াল করবেন যে, আপনার ফোনটি দিন দিন স্লো হয়ে যাচ্ছে, গরম হয়ে যাচ্ছে এবং মাঝে মাঝে Hang ও করছে। তাহলে আপনার ফোনটিকে রিফ্রেশ বা রিসেট করার সময় চলে এসেছে।
এখন আপনি আপনার ফোনকে পুনরায় রিসেট করে আগের রূপে নিয়ে আসতে এবং মোবাইলের সকল অ্যাপ বা সিস্টেমগুলো আপডেট হয়ে একটি গুড পারফরমেন্স প্রোভাইড করবে।
যেভাবে রিসেট করবেন
আপনার স্মার্টফোনের রিসেট করার জন্য প্রথমে ফোনে সেটিং অপশনে চলে আসুন। তারপর System অপশনটি খুঁজে নিন এবং সিস্টেমে ক্লিক করে ভিতরে চলে আসুন। এখানে অনেক গুলো অপশন দেখতে পাবেন এবং সবার শেষে Advanced অপশনে ক্লিক করুন। সেখানে আপনি রিসেট অপশনটি পেয়ে যাবেন।
রিসেট অপশনে ক্লিক করলে মোবাইলটি রিস্টার্ট নিয়ে কিছুক্ষণ পর আপনার নেটওয়ার্ক, অ্যাপস ও ডিভাইসের সকল সিস্টেম আপডেট হয়ে যাবে। এতে করে মোবাইলের ৮০% সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তবে এই রিসেটের ফলে আপনার ফোনের সকল অ্যাপের একসেস চলে যেতে পারে এবং FRP Lock/ গুগল লক হতে পারে ফলে আবারও লগিং করার প্রয়োজন হতে পারে।
মোবাইলকে টিভির সাথে সংযোগ করুন সহজেঃ
আমাদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক মানুষ আছি যারা নটিফিকেশন বারে Cast অপশনটি দেখিনি। আপনি কি জানেন এই Cast অপশনটির কাজ কি? চলুন জেনে নিই।
আপনার বাসায় যদি স্মার্ট টিভি থাকে এবং সেটি যদি আপনার Wifi রাউটারের সাথে সংযোগ থাকে। তাহলে আপনি আপনার সেই টিভির সাথে আপনার রাউটারের সাথে কানেক্টেড যেকোন স্মার্টফোনকে সংযোগ দিতে পারেন। আপনি যখন Cast অপশনে ক্লিক করবেন, তখন সেখানে আপনার টিভির নামটিও শো করবে। টিভির নামের ওপর ক্লিক করলে তখন সেটি সরাসরি আপনার মোবাইলের সাথে কানেক্ট হয়ে যাবে।
আর একবার কানেক্ট হয়ে গেলে আপনি আপনার মোবাইল ফোনে যা যা করবেন সব কিছু টিভিতে দেখতে পাবেন। অর্থাৎ আপনি যদি মোবাইলে ইউটিউব, ফেসবুক, ভিডিও, অডিও বা নেট ব্রাউজিং করেন তাহলে সব কিছু টিভির স্কিনে দেখতে পাবেন।
এই ফিচারসটি ভালোভাবে উপভোগ করতে আপনার ফোন ও টিভির মধ্যে সংযোগ স্থাপন করার জন্য ফোনটিকে রুট করে নিন। তাহলে টিভির সমস্ত স্কিন জুড়ে আপনার ফোনের স্কিন দেখতে পাবেন। এই রকম আরোও ইন্টারেস্টিং পোস্ট পেতে চোখ রাখুন Onlinesheba24 ওয়েবসাইটে ধন্যবাদ।