আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ বিস্তারিত। America visa interview

শেয়ার করুন

আপনারা যারা দীর্ঘদিন প্রতীক্ষার পর আমেরিকার B1/B2 ভিসার ইন্টারভিউ ডেট পেয়েছেন তারা আসলেই খুব ভাগ্যবান। কিন্তু ইন্টারভিউ ডেট পেয়ে এখন নতুন করে আবার চিন্তা করছেন যে, ইন্টারভিউতে কি কি প্রশ্ন আসতে পারে? ইন্টারভিউর প্রিপারেশন কেমন হওয়া উচিত? কিভাবে ইন্টারভিউতে ভালো রেজাল্ট করা যায়? ইত্যাদি।

আপনাদের এই সকল প্রশ্নের সহজ সমাধান নিয়ে আসলাম আজকের পোস্টে। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন কিভাবে ইউএসএ/ আমেরিকার B1/B2 ভিসার ইন্টারভিউতে ভালো রেজাল্ট করতে পারবেন, কিভাবে আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ দিলে খুব সহজে ভিসা হাতে পাবেন ইত্যাদি। তো চলুন শুরু করি।

আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ এ যে যে প্রশ্ন আসতে পারে

দেখুন আমেরিকার ভিসা মূলত এর ইন্টারভিউ এর উপর নির্ভর করে। আপনি যদি আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ এ ভালো উত্তর করতে পারেন এবং কনসুলারকে খুশি করতে পারেন, তাহলে আপনার ভিসা নিশ্চিত। কনসুলার স্যাটিস্পাইড ব্যতীত ভিসা পাওয়া সম্পূর্ণভাবে অসম্ভব একটি ব্যাপার। তাহলে আসুন জেনে নেই কিভাবে উত্তর করে কনসুলারকে খুশি করবেন এবং আমেরিকার ভিসা পাবেন।

প্রশ্ন: কনসুলার আপনার মনের ভীতি কাটানোর জন্য প্রথম ওয়ার্ড হয়ত এইটি বলতে পারে “Good morning, It’s a really hot day, The morning is very rush time etc.” এরকম যেকোন একটি কথা বলতে পারে।

উত্তর: আপনি এটা Thanks,OK, Sure ইত্যাদি যেকোন একটা বলে উত্তর করতে পারেন।

প্রশ্ন: আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ এ কনসুলার হয়তো তার ২য় প্রশ্ন এমন করতে পারে ” What is the purpose of your visit to the USA?” অর্থাৎ USA আপনি কেন ভ্রমণ করবেন?

উত্তর: এই প্রশ্নের প্রতিউত্তরে আপনি দুটি বা তিনটি Sentence বলতে পারেন। আপনি কেন USA ভিজিট করছেন। এটা হতে পারে ব্যবসার জন্য অথবা ভ্রমণ কিংবা আপনার পিতা-মাতা বা আত্নীয় স্বজন কারো সাথে সাক্ষাৎ করা ইত্যাদি।

প্রশ্ন: এর পরে হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারে “What is the reason for travelings at this particular time? অর্থাৎ আপনি এই সময়ে কেন ভ্রমণ করতে চাচ্ছেন?

উত্তর: এই প্রশ্নের উত্তরটি আপনি অব্যশ্যই DS 160 তে যেভাবে দিয়েছেন ঠিক সেম উত্তরটি এখানে দিবেন। অর্থাৎ DS 160 তে যদি বলেন আপনি কোন সেমিনারে বা প্রোগ্রামে যোগদান করবেন তাই এসময় ভ্রমণ জরুরি। তাহলে এখানেও সেটাই বলবেন।

প্রশ্ন: এছাড়াও আরোও কিছু কমন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারে যেমন “Have you been visit the USA before?” অর্থাৎ আপনি আগে কখনও USA তে গিয়েছেন কিনা? সেটিও জিজ্ঞেস করতে পারে।

উত্তর: এখানে উত্তর হিসেবে আপনি যদি পূর্বে কখনও USA গিয়ে থাকেন তাহলে সেটি বলবেন। আর যদি না গিয়ে থাকেন তাহলে বলবেন No, I haven’t been visit the USA before. না, আমি এর আগে USA যাইনি।

প্রশ্ন: আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ এ আরোও জিজ্ঞেস করতে পারে “Do you have a friends or relatives currently in USA?” অর্থাৎ আপনার কি বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোন বন্ধু বা আত্মীয় আছে কিনা?” যদি হ্যা হয় তাহলে তার পরিচয় তুলে ধরবেন। আর যদি না হয়, তাহলে না বলে দিবেন। এটি মূলত DS 160 তে যেভাবে দিয়েছেন সেভাবে বলতে হবে।

আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ এ আসা আরোও কতগুলো কমন প্রশ্ন:

প্রশ্ন: Where will you stay in the USA? অর্থাৎ আপনি আমেরিকায় কোথায় থাকবেন? হোটেলে নাকি কারো বাসায় থাকবেন।

উত্তর: এটি ও নির্ভর করবে সম্পূর্ণ আপনার ওপর। আপনি যদি কোন আত্মীয় বা বন্ধুর বাসায় থাকতে চান তাহলে সেটি বলবেন। অথবা যদি কোন হোটেলে উঠতে চান তাহলে সেই হোটেলের নাম ও সামান্য কিছু তথ্য তুলে ধরবেন।

প্রশ্ন: Do you have any intention on remaining USA? অর্থাৎ আপনার কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকার কোন ইচ্ছা আছে?

উত্তর: এটা সাধারণত তখন জিজ্ঞেস করে যখন কনসুলার আপনার প্রতি পজেটিভ হবে বা আপনাকে ভিসা দিতে আগ্রহী হবে। তখন কিন্তু আপনি Yes or NO দিয়ে Answer করবেন না। ভুলেও Yes বলবেন না। কারণ Yes বললে আপনার ভিসা হারাতে পারেন। তাই No বলবেন এবং তাকে বুঝাবেন যে আপনি আপনার দেশে অবশ্যই ফিরে আসবেন। কারণ এখানে আপনার ফ্যামিলি বা পরিবার আছে, আপনার বিজনেস আছে, ইত্যাদি। যদি ব্যবসা থাকে তাহলে ট্রেডলাইসেন্স বা অন্যকোন ডকুমেন্ট দেখাতে পারেন। এতে করে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা আরোও বেড়ে যাবে।

প্রশ্ন: আপনি যদি বিজনেস ম্যান হয়ে থাকেন তাহলে হয়ত বলতে পারে যে “Who will take care your business when you stay in USA অর্থাৎ আপনি যখন USA থাকবেন তখন আপনার ব্যবসাটি কে দেখভাল করবে।

উত্তর: এক্ষেত্রে আপনি আপনার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম বলতে পারেন। যে আপনার অবর্তমানে আপনার ব্যবসা পরিচালনা করবে।

প্রশ্ন: এছাড়াও আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ তে জিজ্ঞেস করতে পারে ” What is your income source or What is your monthly income or yearly Income অর্থাৎ আপনার ইনকামের মেইন সোর্স বা উৎস কি? অথবা আপনার মাসিক বা বাৎসরিক ইনকাম কত?

উত্তর: এই ক্ষেত্রে আপনি DS 160 তে যেই তথ্য দিয়েছেন সেটি বলতে পারেন। তবে মনে রাখবেন ভুল কিছু বলতে যাবেন না। যা সত্যিই তাই বলবেন। আর কাগজপত্র তৈরির শুরুর দিকে ইনকামটা একটু বেশি দেখানোর চেষ্টা করবেন। এতে ভালো একটা ব্যাকআপ পাবেন।

প্রশ্ন: Who will bear your travel cost? অর্থাৎ আপনার ভ্রমণ খরচ কে বহন করবে?

উত্তর: এক্ষেত্রে আপনার যদি কোন স্পনসার থাকে তার কথা বা তথ্য দিতে পারেন। অথবা আপনি যদি নিজেই নিজের ভ্রমণ খরচ বহন করেন, তাহলে ইনকাম সোর্স দেখাবেন এবং বলবেন। I don’t need a sponsor, I have the ability to bear my travel costs. Because my monthly Income Is around 5,000$ per month. 5000$ এখানে আপনার মাসিক ইনকাম যত তা উল্লেখ্য করবেন।

বলে রাখা ভালো, আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ এর পূর্বে অবশ্যই ভ্রমণ রিলেটেড যাবতীয় খারচ সম্পর্কে একটা বেসিক ধারণা নিয়ে নিবেন। যেমন: আপনার ফ্লাইট খরচ কত?, হোটেল খরচ কত?, আপনার ভিসা প্রসেসিং খরচ কত? ইত্যাদি। প্রশ্ন গুলো মূলত কনসুলার আপনার DS ফাইল থেকে আপনাকে জিজ্ঞেস করবে।

যখন আপনার ফাইলটি তার সামনে রাখা হবে, সে আপনার সম্পূর্ণ ফাইলটি স্টাডি করে দেখবে। আপনার মাসিক ইনকাম কত, ইনকাম সোর্স কি, পূর্বে ভ্রমণ রেকর্ড আছে কিনা, আপনার স্পনসার আছে কিনা, এ সমস্ত বিষয় থেকে যেখানে কনসুলারের সন্দেহ লাগবে সেখান থেকে প্রশ্ন করে উনি বিষয় গুলো কনফর্ম করে নিবেন।

প্রশ্ন: আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ এ বাংলায় প্রশ্নের উত্তর করা যাবে কিনা?

উত্তর: হ্যা, আপনি বাংলা বা ইংরেজি যে ভাষায় আপনি ভালো বুঝেন বা বুঝাতে পারবেন সেই ভাষায় উত্তর করতে পারবেন। তবে মনে ভয় রাখা যাবে না। ১০০% কনফিডেন্স এর সাথে প্রশ্ন গুলোর উত্তর করতে হবে। তবে ভ্রমণ করার ক্ষেত্রে ইংরেজি আবশ্যক নেই। কিন্তু স্টুডেন্ট হলে অবশ্যই ইংরেজিতে প্রশ্নের উত্তর করতে হবে।

আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ গাইড লাইন

আমেরিকা ভিসা ইন্টারভিউ এ যাওয়ার পূর্ব একজন এক্সপার্টকে আপানার সমস্ত ডকুমেন্ট গুলো দেখাতে পারেন। এতে করে উনি আপনাকে একটা ধারণা দিতে পারবে যে, হ্যাঁ, এই এই জায়গা থেকে আপনাকে প্রশ্ন করতে পারে। তখন সেই বিষয়ে একটু ধরণা নিয়ে নিলেই হবে।

আপনি যদি ভ্রমণ, ভিজিট বা চিকিৎসার জন্য USA ভিসা আবেদন করেন তখন ইংরেজি না জানলেও হবে। সুধু মাত্র স্ট্রং ইনকাম সোর্স বা স্ট্রং ব্যাংক স্টেটমেন্টে দেখালেই হবে।  কিন্তু আপনি স্টুডেন্ট বা ইন্টার ন্যাশনাল মার্কেটার হলে তখন ইংরেজি প্রয়োজন হবে। যা শুরুতেই বললাম।

আরো তথ্য পেতে পড়ুনঃ

অনলাইনে বিমানের টিকেট কাটার নিয়ম।

এয়ারটেল মিনিট চেক ও ফ্রি ইন্টারনেট অফার।

 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *