ডিজিটাল মার্কেটিং কি ও কত প্রকার? বিস্তারিত জানুন।

শেয়ার করুন

বর্তমান সময়ের অন্য সব ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর গুলোর মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং অন্যতম। বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের কাছে এর জনপ্রিয়তা অত্যাধিক। তাই অনেক নতুন ফ্রিল্যান্সিংদের মনে প্রশ্ন জাগে ডিজিটাল মার্কেটিং কি? কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করব বা কিভাবে কাজ শিখব ইত্যাদি। তাদের জন্য আজকের পোস্টটি। এই পোস্টে ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হলো।

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

ডিজিটাল মার্কেটিং দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত ১/ ডিজিটাল (আধুনিক) ২/ মার্কেটিং (প্রচার-প্রসার) অর্থাৎ ডিজিটাল মার্কেটিং হলো আধুনিকভাকে পন্য বা সার্ভিসের প্রচার করা। যেমন: Facebook, YouTube, Instagram tiktok, Google ইত্যাদি।

ডিজিটাল মার্কেটিং কত প্রকার?

অনলাইন মার্কেটিং এর অনেক গুলো প্রকার বা ধাপ রয়েছে যেমন:

  • এসইও মার্কেটিং
  • এসইএম মার্কেটিং
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
  • ই-কমার্স প্রডাক্ট মার্কেটিং
  • সিপিএ মার্কেটিং
  • ফেসবুক মার্কেটিং
  • ইউটিউব মার্কেটিং
  • ব্লগ মার্কেটিং
  • জিমেইল মার্কেটিং
  • ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং
  • লিংকডিন মার্কেটিং
  • টিকটক মার্কেটিং
  • গুগল মার্কেটিং
  • হোয়াটসঅ্যাপ মার্কেটিং
  • প্রিন্টারেস্ট মার্কেটিং
  • রিডইট মার্কেটিং ইত্যাদি

এসইও (SEO) মার্কেটিং কি?

এসইও (SEO) বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার সাহায্যে একটি ওয়েবসাইট বা ওয়েব পেইজের ভুল ত্রুটি সংশোধন করে ব্যবহারকারীদের অনুসন্ধান ফলাফলের প্রথম তালিকায় দেখানোর চেষ্টা করা। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা SEO এর ব্যবহার সর্বত্র লক্ষ করা যায়। যেমন: ওয়েবসাইট এসইও, ফেসবুক পেইজ এসইও, ইউটিউব এসইও ইত্যাদি।

এসইএম (SEM) মার্কেটিং কি?

ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বা মার্কেটিং বৃদ্ধির জন্য ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরে যে গুরুত্বপূর্ণ কাজ বা সেটিং করতে হয় তাকে SEM বা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বলে। এটি SEO এর মতো একটি পদ্ধতি যা ওয়েবসাইটে গুগলের সার্চ রেজাল্টের প্রথম নিয়ে আসতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটি পদ্ধতির নাম যেখানে অনেক জন দক্ষ মার্কেটার একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের হয়ে তাদের পণ্য বা সার্ভিসের মার্কেটিং করে থাকে। যাতে করে উক্ত প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সার্ভিসের বেচা-কেনা বৃদ্ধি পায়। যেমন: Amazon affiliate, Cj Affiliate, Theme Forest affiliate ইত্যাদি।

ই-কমার্স প্রডাক্ট মার্কেটিং কি?

ই-কমার্স প্রোডাক্ট মার্কেটিং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মতই একটি বিশেষ পদ্ধতি। যার সাহায্যে অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ই-কমার্স পন্যের মার্কেটিং করা হয়। এতে করে পন্যের সেলস বৃদ্ধি পায়।

সিপিএ (CPA) মার্কেটিং কি?

CPA মার্কেটিং হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর বিকল্প একটি পদ্ধতির নাম। যেখানে একজন মার্কেটারকে নির্দিষ্ট একটি কাজ শেষ করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন দেওয়া হয়। CPA এর সম্পূর্ণ মিনিং হলো Cost per action অর্থাৎ প্রতিটি কাজ বা একশনের বিনিময় অর্থ প্রদান করা।

ফেসবুক মার্কেটিং কি?

ফেসবুক  মার্কেটিং হলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর একটি প্রকার বা মাইক্রো নিশ। ফেসবুক মার্কেটিং হলো ফেসবুক ভিত্তিক পন্য বা সার্ভিসের মার্কেটিং করার পদ্ধতির নাম। যেমন: ফেসবুক এডস দিয়ে টার্গেটেড লোকেশন ও ব্যক্তির নিকট তার ইন্টারেসটেড পণ্য বা সার্ভিস গুলো পৌঁছে দেওয়া। ফেসবুক মার্কেটিং একটি জনপ্রিয় ডিজিটাল মার্কেটিং।

ইউটিউব মার্কেটিং কি?

এটিও সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মধ্যে জনপ্রিয় আরেকটি অনলাইন মার্কেটিং সিস্টেম। মূলত ইউটিউব অ্যাড বা বিজ্ঞাপন দিয়ে কোন পণ্য বা সার্ভিসের মার্কেটিং করার পদ্ধতি হলো ইউটিউব মার্কেটিং। এই অনলাইন মার্কেটিং ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটরসদের কাছে জনপ্রিয়।

ব্লগ মার্কেটিং কি?

ওয়েবসাইট বা ব্লগের মাধ্যমে কোন পণ্যের মার্কেটিং করাকে Blog মার্কেটিং বলা হয়। এই পদ্ধতিতে আপনি পাঠকদের কাছে পন্যের বিজ্ঞাপন তুলে ধরতে পারবেন। কোন পাঠক যখন নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপরে গুগলে কোন কিছু লিখে সার্চ করে। তখন তার সমানে ঐ রিলেটেড অনেক গুলো আর্টিকেল শো করে। যা মূলত ব্লগ থেকে পাবলিশ করা হয়।

জিমেইল মার্কেটিং কি?

জিমেইল ভিত্তিক যেসব মার্কেটিং করা হয় তাকে জিমেইল মার্কেটিং বলে। Gmail এর পরিপূর্ণ রুপ হলো Google mail এটি এমন একটি এড্রেস বা পরিচিতি যার সাহায্যে এর ব্যবহারকারী বার্তা আদান প্রদান ও স্টোরেজ করতে পারে। তাই এই জিমেইলকে কাজে লাগিয়ে একজন মার্কেটার তার টার্গেটেড ব্যক্তিদের নিকট পন্যের বার্তা পাঠান বা মার্কেটিং করে থাকেন। এতে করে পণ্যের সেল বা বিক্রয় বৃদ্ধি পায়।

গুগল এডস মার্কেটিং

এটি গুগলের একটি অনলাইন মার্কেটিং সার্ভিসের নাম। এর সাহায্যে গুগল ব্লগ ও ইউটিউব সহ অসংখ্য অ্যাড নেটওয়ার্কে নিজ ও অন্যদের মার্কেটিং বা বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন। ডিজিটাল মার্কেটারদের কাছে এটি একটি জনপ্রিয় মার্কেটিং পদ্ধতি।

উল্লেখিত সোশ্যাল মিডিয়া গুলো ছাড়াও আরও অনেক সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বা অনলাইন মার্কেটিং রয়েছে যেমন:

  • ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং
  • লিংকডিন মার্কেটিং
  • টিকটক মার্কেটিং
  • গুগল মার্কেটিং
  • হোয়াটসঅ্যাপ মার্কেটিং
  • প্রিন্টারেস্ট মার্কেটিং
  • রিডইট মার্কেটিং ইত্যাদি

এর যেকোন একটি সেক্টর নিয়ে কাজ করে আপনি সফল হতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

অনেক নতুন ফ্রিল্যান্সার জানতে চান অনলাইন মার্কেটিং এর ক্যারিয়ার কেমন। তাদের উদ্দেশ্যে বলি। অনলাইন মার্কেটিং এমন একটি পেশা যার ব্যবহার নেট জগত অর্থাৎ গুগল, ইউটিউব, ফেসবুক ইত্যাদি যত দিন রয়েছে এর ব্যবহার ও তত দিন রয়েছে। বরং দিন দিন যত বেশি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়বে অনলাইন মার্কেটিং এর ব্যবহার তত বেশি দ্রুত বেড়ে উঠবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং পূর্বেও ছিল। যদিও তখন গুগল সরাসরি নিজেদের বা অন্যদের জন্য মার্কেটিং করে যেত। কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে এখন ফ্রিল্যান্সাররা ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ করে যাচ্ছে।

ডিজিটাল মার্কেটিং করে কত টাকা আয় সম্ভব?

অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে। অনলাইন মার্কেটিং করে কত টাকা আয় সম্ভব। তাদের উদ্দেশ্যে বলি। আপনি যদি একজন এক্সপার্ট ডিজিটাল মার্কেটার হতে পারেন তাহলে প্রতিমাসে কমপক্ষে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।

আর যদি আপনি একজন নন এক্সপার্ট অনলাইন মার্কেটার হয়ে থাকেন। তাহলে মাসে ৫০০ টাকা ইনকাম করাও কষ্ট কর হয় পড়বে। তাই শুরুতে অর্থে নয় সার্ভিস বা কাজে মন দিন।

কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করব?

ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে জানার পর। আপনার যদি মনে হয় যে আপনি সত্যিই অনলাইন মার্কেটিং শুরু করবেন। তাহলে সবার প্রথমে যেই কাজটি করতে হবে তাহলো: ফোন বা কম্পিউটা এর ইন্টারনেট সংযোগ ও ব্যাটারি ব্যাকাপ নিশ্চিত করা। মোবাইল দিয়েও অনলাইন মার্কেটিং করা যায়। তবে ব্যাটারি ব্যাকআপ ও এন্ড্রয়েডভার্সন ভালো হতে হবে।

ডিভাইস নির্বাচনের পর এবার আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর যেকোন একটি সেক্টরের কাজ শিখতে হবে এবং সেই কাজে পারদর্শী হতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ ৩ ভাবে শিখতে পারবেন।

  1. নিজে নিজে
  2. প্রতিষ্ঠান থেকে
  3. পার্সোনালি অন্যের সাহায্যে

নিজে নিজে যদি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চান তাহলে ইউটিউব ফেসবুক বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য নিতে পারেন। আর যদি কিছু অর্থের বিনিময় কোন প্রতিষ্ঠান থেকে অনলাইন মার্কেটিং শিখতে চান তাহলে বাংলাদেশের নামকার অনেক কুচিং/ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে। তাদের সাহায্য ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে পার্সোনালি কোন বন্ধুবাদ্ধব বা একজন এক্সপার্ট ডিজিটাল মার্কেটারের কাছ থেকেও অনলাইন মার্কেটিং শিখতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ শিখার পর এবার নিজে নিজেন জন্য মার্কেটিং এর কাজ করুন এবং বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে নিজের প্রোফাইল তৈরি করুন। তারপর অর্ডার পেলে সঠিকভাবে কাজ করে জমা করুন। এভাবে আপনিও হয়ে উঠতে পারবেন একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটার।

শেষ কথা:

আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগছে। এরকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট অনলাইন ইনকাম, NID,  জাতিয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট, ভিসা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে ধন্যবেদ!

আরো তথ্য জানতে পড়ুনঃ

কিভাবে ফাইবারে ১ম অর্ডার পাবেন ও সঠিক গিগ তৈরি করে ?

ফাইবারে ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে ১০ লাখ টাকা ইনকাম।

অনলাইনে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ই ঋণ নেওয়ার উপায়।

 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *