MRP থেকে ই-পাসপোর্ট রিনিউ বা নবায়ন তথ্য।

শেয়ার করুন

MRP থেকে ই-পাসপোর্ট রিনিউ বা নবায়ন করা সহজ। বিদেশ যাওয়া কিংবা অনলাইন পেমেন্ট অথবা ভার্চুয়াল ভিসা বা মাস্টার কার্ড পেতে পাসপোর্ট থাকা আবশ্যক। প্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের মধ্যে অধিকাংশ ব্যক্তিরা অনলাইনে ই-পাসপোর্ট তৈরি করেন। কারণ, অনলাইনে ই-পাসপোর্ট তৈরি করা একদম সহজ ও ঝামেলা বিহীন। ঘরে বসে হাতে থাকা স্মার্ট ডিভাইস দিয়ে তৈরি করা যায় ই-পাসপোর্ট।

কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে পাসপোর্টকে সচল রাখতে বা ব্যবহারযোগ্য রাখতে প্রয়োজন হয় পাসপোর্ট রিনিউ বা নাবায়ন। MRP থেকে ই-পাসপোর্ট করতে অনেক সময় দালাল বা থার্ডপার্টি ব্যক্তিদের দিয়ে এসব কাজ করাতে অনেক টাকা খরচ হয়। কিন্তু আজ আমরা দেখব কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে MRP থেকে ই-পাসপোর্ট রিনিউ বা নাবায়ন করা যায়। চলুন শুরু করি…

MRP থেকে ই-পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়মঃ

MRP থেকে ই-পাসপোর্ট করতে আপনার ডিভাইসের ইন্টারনেট সংযোগ সচল রেখে চলে আসুন যেকোন ব্রাউজারে। তারপর সার্চবারে epassport.gov.bd লিখে চলে আসুন  এই  ঠিকানায়।

তারপর ওয়েবসাইটের হোম পেইজের ফাস্ট অপশনে ই-পাসপোর্ট তৈরি বা রিইস্যু অপশন দেখতে পাবেন। সেটাতে ক্লিক করে শুরু করুন আপনার কার্যক্রম।

১ম ধাপঃ MRP থেকে ই-পাসপোর্ট করতে আপনার ব্যক্তিগত কিছু তথ্য দিতে হবে। যেমনঃ

  • নাগরিকত্ব
  • বর্তমান ঠিকানা
  • বিভাগ
  • থানা

সবগুলো তথ্য আপনার পাসপোর্টের অথ্য অনুযায়ী সিলেক্ট করার পর Continue অপশনে ক্লিক করুন।

২য় ধাপঃ এই ধাপে আপনার একটি সচল মোবাইল নাম্বার ও ই-মেইল এড্রেস ভেরিফিকেশন করতে হবে। তাই প্রথমে আপনার একটি ই-মেইল এড্রেস দিয়ে Continue অপশনে ক্লিক করুন। তারপর আবারও আপনার একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে Continue অপশনে ক্লিক করুন।

আরো পড়ুন: অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ।

৩য় ধাপঃ এই ধাপে আপনাকে একটি পাসওয়ার্ড ও পার্সোনাল কিছু ইনফরমেশন দিতে হবে যেমনঃ- নাম ও সিওর নেম। তবে মনে রাখবেন আপনার নামের প্রথম অংশ ও সিওর নেম মিলে আপনার অর্জিনাল নাম ধরা হয়। তাই দুটি ভাগে এটি বসানোর চেষ্টা করবেন।

ধরুন নামের জায়গায় পাসপোর্টের আলোকে MD + extension সিওর নেমে আপনার নাম যেমন: Rohim তাহলে দুটা নাম মিলে অর্জিনাল নাম MD Rohim হবে। সবগুলো তথ্য বসানো শেষে Create an account অপশনে ক্লিক করুন।

৪র্থ ধাপঃ এই ধাপে মেইল ভেরিফিকেশন করতে হবে। অর্থাৎ আপনার ই-মেইল বক্সে একটি মেইল যাবে। সেখানে একটি লিংক দেখতে পাবেন। ঐ লিংকে ক্লিক করলে আপনার ই-মেইল এড্রেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হবে। ( যদি মেইলটি হোম পেইজে না পান তাহলে Spam ফোল্ডারে দেখতে পারেন)

এ পার্যায়ে আপনার একাউন্ট টি লগইন করার জন্য প্রস্তুত। এখন Login অপশনে ক্লিক করে ই-মেইল আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে নিন।

ই-পাসপোর্ট রিনিউর সহজ প্রসেসঃ

লগইন করার পর আপনার সামনে Apply for new e-passport একটা অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করে পাসপোর্ট এর ধরণ নির্বাচণ করুন।

Alert text: এপ্লাই ফর নিউ ই-পাসপোর্ট অপশনটা দেখে অনেকে ভাববেন আপনি তো নতুন পাসপোর্ট করছে না। আপনি পুরনো পাসপোর্টকে রিনিউ করবেন। সেক্ষেত্রে জেনে রাখা ভালো আপনি পাসপোর্ট রিনিউ করছেন মানে নতুন একটা নতুন পাসর্পোট পাচ্ছেন।

এছাড়াও আপনি এই ধাপটি পার না হলে পাসপোর্ট রিনিউ অপশন পাবেন না তাই আমাদের দেখানো পথটি অনুসরণ করুন।

এখন পাসপোর্টের ধরণ অর্ডিনারি পাসপোর্ট সিলেক্ট করুন। আর যারা সরকারী কর্মজীবী তারা অফিসিয়াল পাসপোর্ট অপশনটি বেছে নিবেন। তারপর Save a continue অপশে ক্লিক করুন।

৫ম ধাপঃ MRP থেকে ই-পাসপোর্ট করতে এই ধাপে আপনাকে আরোও কিছু তথ্য সিলেক্ট করা লাগতে পারে যেমন:

  1. লিঙ্গ
  2. পেশা
  3. ধর্ম
  4. কান্ট্রি কোড
  5. জন্ম নিবন্ধন তথ্য
  6. জন্মসাল
  7. দেশ
  8. বিভাগ
  9. সিটিজেনশিপ

সবগুলো তথ্য সঠিকভাবে সিলেকশনের পর Save and continue বাটনে ক্লিক করুন।

৬ষ্ঠ ধাপঃ এই ধাপে আপনার স্থায়ী বা বর্তমান ঠিকানার তথ্য সিলেকশন করতে হবে যেমন:

  • থানা
  • জেলা
  • গ্রাম
  • পোস্ট অফিস ইত্যাদি

একইভাবে বর্তমান ও স্থায়ী এড্রেস দেওয়ার পর সবগুলো তথ্য যাচাই করুন যেন পূর্বের পাসপোর্টের সাথে মিল থাকে। তবে বর্তমান এড্রেস ও পাসপোর্টের বর্তমান এড্রেসে অমিল থাকলে সমস্যা হবে না। সব তথ্য সিলেকশনের পর আবারো Save and continue অপশনে ক্লিক করুন।

MRP থেকে ই-পাসপোর্ট নাবায়ন তথ্য Onlinesheba24

 

এ পর্যায়ে আপনি কি নতুন পাসপোর্ট ব্যবহারকারী নাকি MRP থেকে ই-পাসপোর্ট নবায়ন করছেন সেটি Select করতে হবে। যেহেতু আপনি পাসপোর্ট রিনিউ করছেন তার মানে আপনার কাছে ইতিমধ্যে একটা পাসটোর্ট রয়েছে। তাই Yes, I have a passport অপশনটি সিলেক্ট করুন।

তবে আপনার পাসপোর্টি যদি MRP পাসপোর্ট হয় তাহলে Yes, I have a MRP পাসপোর্ট অপশন সিলেক্ট করুন। আর যদি আপনার পাসপোর্টটি ePP হয় তাহলে Yes, I have a ePP passport সিলেক্ট করুন।

পাসপোর্ট সিলেকশনের পর আপনাকে পাসপোর্ট সম্পর্কিত কিছু তথ্য দিতে হবে যেমন:

  1. পাসপোর্টের ধরণ
  2. পাসপোর্ট নাম্বার
  3. ইস্যু ডেট
  4. এক্সপায়ার্ড ডেট
  5. NID নাম্বার ইত্যাদি

সবগুলো নাম্বার ও তথ্য সিলেকশনের পর Save and continue অপশনে ক্লিক করুন।

৭ম ধাপঃ MRP থেকে ই-পাসপোর্ট করতে এই ধাপে পিতা-মাতার পরিচয় দিতে হবে যেমন:

  1. পিতা-মাতার নাম
  2. জাতীয়তা
  3. পেশা ও
  4.  NID নাম্বার (Optional)

অবশ্যই উপরিউক্ত সকল তথ্য আপনার মাতা পিতার এনআইডি তথ্য অনুযায়ী দিতে হবে। সব দেওয়ার পরে Save and continue বাটনে ক্লিক করুন।

৮ম ধাপঃ এই ধাপে আপনার বৈবাহিক ধরণ নির্বাচণ করুন। বিবাহিত হলে বিবাহিত আর অবিবাহিত হলে অবিবাহিত। তারপর Save and continue

আরোও পড়ুন: অনলাইনে ই-টিন (E-tin) সার্টিফিকেট তৈরি করুন ২ মিনিটে

৯ম ধাপঃ MRP থেকে ই-পাসপোর্ট করতে এই ধাপে আপনার Emergency contact ইনফরমেশন দিতে হবে। অর্থাৎ জরুরী মুহুর্তে আপনি ছাড়াও অন্য কার সাথে পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ে যোগাযোগ করা যাবে। আপনি যাকে সিলেক্ট করবেন তার নাম, বর্তমান ঠিকানা, ফোন নাম্বার ইত্যাদি বসিয়ে Save and continue অপশনে ক্লিক করুন।

১০ম ধাপঃ এই ধাপে পাসপোর্ট ধরণ সিলেক্ট করতে হবে। অর্থাৎ আপনি কত পাতার পাসপোর্ট কত বছরের জন্য নিতে চাচ্ছেন। যেমন:

  1. ৪৮ পাতা (৫ বছর) ৪০২৫ টাকা ।
  2. ৪৮ পাতা (১০ বছর) ৫৭৫০ টাকা।
  3. ৬৪ পাতা (৫ বছর) ৬৩২৫ টাকা ।
  4. ৬৪ পাতা (১০ বছর) ৬৩২৫ টাকা।

অপশন গুলো পরিবর্তন করে আপনি পাসপোর্টের বর্তমান মূল্য দেখে নিতে পারবেন। তারপর Save and continue

১১তম ধাপঃ এই ধাপে পাসপোর্ট ডেলিভারি টাইম সিলেক্ট করতে হবে। রেগুলার অথবা ইমারজেন্সি। তবে ইমারজেন্সিতে সর্বদা টাকা একটু বেশি দিতে হবে। এটি সিলেকশনের পর সিডিউল টাইম সিলেক্ট করে Save and continue বাটনে ক্লিক করুন।

Overview : এ পর্যায়ে আপনার সামনে আপনার সবগুলো তথ্য কনফর্মের জন্য আরোও একবার দেখানো হবে। সব গুলো তথ্য ভালোভাবে চেক করে নিন। যদি কোন তথ্য ভুল থাকে Edit অপশনে ক্লিক করে পরিবর্তন করে নিন। আর যদি সব তথ্য সঠিক থাকে তাহলে Confirm and proceed to payment অপশনে ক্লিক করুন।

পেমেন্ট গেটওয়ে: MRP থেকে ই-পাসপোর্ট করতে এই ধাপে আপনাকে পেমেন্ট পরিশোধ তথ্য দেখানো হবে। যেহেতু এখনও পর্যন্ত অনলাইন পেমেন্ট যুক্ত হয়নি সেক্ষেত্রে আপনাকে Dhaka bank, Sonali Bank, One bank, Asia Bank, Trust bank, Premier Bank  যেকোন একটি শাখায় গিয়ে ফিজিক্যালি পেমেন্ট করতে হবে। তারপর একটু নিচে থেকে Continue অপশনে ক্লিক করে আপনার অ্যাপ্লিকেশন সামারি ও অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম পিডিএফ ডাউন-লোড ও প্রিন্ট করে নিতে হবে।

তারপর একটু নিচে গেলে আপনি আবেদন পত্রের সাথে জরুরি কিছু কাজপত্র সংযুক্ত করার লিস্ট দেখতে পাবেন। লিস্টটির একটি স্কিনশর্ট নিয়ে রাখুন যাতে করে পরবর্তীতে ডকুমেন্ট গুলো সংগ্রহ করতে সুবিধে হয়।

ডুকেমন্ট সাবমিশন ডেট:

সবগুলো ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে যেই তারিখে আপনি ফিঙ্গারপ্রিন্টের জন্য সিডিউল টাইম সিলেক্ট করছেন সেই তারিখে সকল ডকুমেন্ট নিয়ে সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হবেন।

 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *