কিভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করা যায় দেখে নিন।

শেয়ার করুন

ওয়েবসাইট বলতে কোন তথ্যকে ওয়েব সার্ভারের সংগ্রহ রাখার বিনিময় তা অন্যদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। যেমন: লেখা, ডকুমেন্ট, বই পুস্তক, গান, ভিডিও, অডিও ইত্যাদি। ওয়েবসাইট মূলত ওয়েব সার্ভার বা ডোমেইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

কিভাবে একটি ওয়েবসাইট তৈরি শুরু করবেন

বর্তমানে অনেক ধরণের Website এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যেমন: ভিডিও, অডিও, সার্ভিসেস, অনলাইন কোর্স, অনলাইন আর্নিং, ই-কমার্স, ব্লগিং ইত্যাদি। ওয়েবসাইট দুইভাবে শুরু করা যেতে পারে আর তাহলো ফ্রি ও পেইড।

ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি

আপনি যদি কোন ধরনের ইনভেস্টমেন্ট ছাড়াই সম্পূর্ণ ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে আপনি ব্লগার ব্যবহার করতে পারেন। ব্লগার একটি গুগলের প্রডাক্ট যা গুগল বিনামূল্যে ব্লগিং বা ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। আপনি চাইলে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ণ ফ্রিতে ওয়েবসাইট বা ব্লগিং শুরু করতে পারেন।

ওয়েবসাইট তৈরির খরচ/পেইড ওয়েবসাইট

পেইড ওয়েবসাইট তৈরি অর্থ হল কিছু টাকার বিনিময় ওয়েবসাইট তৈরি করা। ফ্রি ওয়েবসাইট গুলোর চেয়ে পেইড ওয়েবসাইট গুলোতে অনেক বেশি রেসপন্স পাওয়া যায়। এছাড়াও পেইড ওয়েবসাইটে চাইলে নিজের ইচ্ছে মতো সাজানো, কস্টামাইজ করা, ফিচারস যোগ বা বাতিল করার মতো নানা প্লাগিন ব্যবহার করে কাজ করা যায়।

ওয়েবসাইট তৈরির করতে কি কি লাগে

সাধারণত ৩টি উপকরণের সাহায্যে একটি Website তৈরি করা যেতে পারে যেমন:

  • ডোমেইন
  • হোস্টিং ও
  • ওয়েবসাইট তৈরির দক্ষতা

ডোমেইন কি?

ডোমেইন হলো নাম বা পরিচিতি অর্থাৎ ওয়েবসাইটের নামকে ডোমেইন বলা হয়। একটি ডোমেইন সুধু মাত্র একটি ওয়েবসাইটের জন্যই ব্যবহার হয়ে থাকে। একটি সাইটকে নির্দিষ্ট একটি সার্ভারের সাথে সংযুক্ত স্থাপন করে।

হোস্টিং কি?

হোস্টিংকে আপনি একটি মেমোরির সাথে তুলনা করতে পারেন। একটি মেমোরি যেমনিভাবে আমাদের মোবাইলের ডাটা গুলোকে সংরক্ষণ করে ঠিক একইভাবে একটি হোস্টিং আপনার ওয়েবসাইটের সকল তথ্য বা উপাত্যকে সংরক্ষণ করে।

ওয়েবসাইট তৈরির দক্ষতা

দক্ষতা অর্থ হল কোন কিছু করার পূর্ব অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান। তবে আপনি চাইলে দক্ষতা ছাড়াও নতুন অবস্থায় একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজন একটু ধৈর্য্য। আপনি চাইলে ইউটিউব দেখে দেখে সম্পূর্ণ ফ্রিতে একটি ব্লগ Website শুরু করতে পারেন। তবে নিজের ইচ্ছে মতো এডভান্স লেভেলের কোন ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলে একজন ওয়েব এক্সপার্ট বা বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে হবে।  নিজেকে একজন ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখতে হবে যেমন: HTML, CSS, JavaScript ইত্যাদি।

ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরি করতে হয়

আপনি যদি সম্পূর্ণ ফ্রিতে ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে ব্লগার ব্যবহার করতে পারেন। ব্লগার ব্যবহার করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে সবার প্রথমে ফোনের ইন্টারনেট সংযোগটি সচল রাখুন। তারপর ফোন থেকে গুগল ক্রোমো ব্রাউজারটি ওপেন করুন এবং সার্চবারে Blogger লিখে সার্চ করুন। আপনার সামনে অনেক গুলো ওয়েবসাইট শো করবে। সেখান থেকে সবার উপরের সাইটে ক্লিক করুন। তাহলে আপনি এরকম একটি পেইজ পাবেন।

এখন Create your blog এ ক্লিক করুন। আপনার সামনে আপনার ডিভাইসে থাকা জিমেইল গুলে প্রর্দশিত হবে। এখন সেখান থেকে যেই জিমেইল দিয়ে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে চান সেটি সিলেক্ট করুন। তাহলে পেইজ লোড হবে এবং আপনাকে ২য় ধাপে নিয়ে যাওয়া হবে। এপর্যায়ে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি Title বা নাম পছন্দ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ Bongovasha, Onlinesheba24, BBC news ইত্যাদি।

টাইটেলে Type করে NEXT বাটনে ক্লিক করুন। এ পর্যায়ে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট url পছন্দ করতে হবে। যেমন: bongovasha.com আপনি চাইলে আপনার টাইটেলকে ও url হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। url type করে আবারও NEXT বাটনে ক্লিক করুন। তবে মনে রাখবেন url টাইপ করার পর যদি sorry, this blog address is not available লেখা আসে তাহলে বুঝবেন এই Url পূর্বে কেউ ব্যবহার করেছে। তাই আপনি এটা ২য় বার ব্যবহার করতে পারবেন না। এ জন্য আপনাকে অন্য একটি নতুন Url পছন্দ করতে হবে।

Url তৈরির করার সময় কিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন। আর তা হলো: একের অধিক Url পছন্দ তালিকায় রাখুন। একটা কাজ না হলে অন্যটি দিয়ে চেষ্টা করুন। Url এর মধ্যে কোন ধরণের স্পেস, চিহ্ন ব্যবহার করা যাবে না। বানানে সহজ ও কমওয়ার্ড বিশিষ্ট এমন ওয়ার্ড ব্যবহার করুন যা একবার কেউ দেখলে সাথে সাথে মুখস্ত হয়ে যাবে। যেমন: bbc news, cns, bongo, newstv ইত্যাদি।

Url পছন্দ হলে এবং available থাকলে NEXT বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার Website তৈরি হয়ে যাবে। তবে মনে রাখবেন, ওয়েবসাইট তৈরি করার পরেই কাজ শেষ নয়। সেই Website থেকে ইনকাম করতে চাইলে বা প্রফেশনাল লুক দিতে চাইলে সেটাতে থিম আপলোড,কাস্টমাইজ ও SEO করা জরুরি। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে একটি ওয়েবসাইটে থিম আপলোড, কাস্টমাইজ ও SEO করবেন।

ব্লগার ওয়েবসাইটে থিম আপলোড করার নিয়ম

ব্লগার ওয়েবসাইটে থিম আপলোডের করতে প্রথমে ব্রাউজারে নতুন একটি ট্যাব নিন। তারপর সার্চ বারে Free blogger template for blogger লিখে সার্চ করুন। অনেক গুলো Website চলে আসবে। সেখান থেকে যেকোন একটি সাইটে ঢুকে থিম ডেমো দেখে আপনার পছন্দের একটি থিম ডাউনলোড করে নিন।

থিম সম্পূর্ণ ডাউনলোড হলে সেটাকে Unzip করে নিন। তারপর আবার ব্লগারে ট্যাবে ফিরে আসুন। বাম পাশের 3 ডট মেনু থেকে Theme অপশনে ক্লিক করুন। এরপর CUSTOMIZE অপশনের নিচে ড্রপডাউন বাটনে ক্লিক করুন।

এখানে অনেক গুলো অপশন দেখতে পাবেন সেখান থেকে Restore অপশনে ক্লিক করে আপনার ফাইল ম্যেনেজার থেকে Unzip থিমের .xml ফাইলটি সিলেক্ট করুন এবং কিছু সময় অপেক্ষা করুন। দেখবেন আপনার থিমটি আপলোড হয়ে যাবে। এখন Layout থেকে থিমটি কাস্টমাইজ করে নিন।

পেইড ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরি করতে হয়

আপনি যদি কিছু টাকা ইনভেস্ট করে পেইড ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে প্রথমে আপনাকে একটি ডোমেইন ও একটি হোস্টিং কিনতে হবে। আপনি যেকোন একটি হোস্টিং প্রোভাইডার কোম্পানি থেকে কম খরচে ডোমেইন হোস্টিং ক্রয় করতে পারেন। একটি ডোমেইনের মূল্য সর্বনিম্ম ৯৯ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫০০ টাকা হয়ে থাকে। আবার ১০জিবি হোস্টিং এর মূল্য ৫০০-২৫০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। আপনি হোস্টিং ও ডোমেইন কিনে সেটা ওয়ার্ডপ্রেসের সাথে কানেক্ট করে Website তৈরি করতে পারবেন।

ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার উপায়

আপনি যদি ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করতে চান তাহলে অনেক গুলো উপায় ফলো করতে পারেন। Website থেকে ইনকামের অনেক গুলো উপায় রয়েছে যেগুলো নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।

  • গুগল অ্যাডসেন্স
  • প্রডাক্ট সেল
  • মাইক্রোজব সাইট
  • সার্ভিস সেল
  • সাবস্ক্রিপশন
  • অ্যাফিলিয়েট
  • রেফার
  • সিপিএ মার্কেটিং ইত্যাদি

গুগল অ্যাডসেন্স থেকে ইনকাম

আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে তাহলে আপনি সেখানে গুগল এডসেন্সের অ্যাড বসিয়ে ইনকাম করতে পারবেন। গুগল এডসেন্স থেকে ইনকাম করা খুবই সহজ এবং এর জন্য আপনার সাইটে বেশ কিছু আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে। তারপর গুগল এডসেন্সের রুলস ও নিয়ম অনুযায়ী গুগল এডসেন্সের জন্য আবেদন করলে আবেদনের ৭ থেকে ১৪ কর্ম দিবসের মধ্যে এডসেন্স অনুমোদন দিলে গুগল অ্যাডস আপনার Website এ শো করবে। সেখান থেকে ইনকাম করা যাবে।

মাইক্রো জব সাইট

বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার চাহিদা সম্পর্কে আমরা সকলে অবগত আছি। বিশেষ করে যারা সোশ্যাল মিডিয়ার কন্টেন্ট ক্রিয়েটর যেমন: facebook ভিডিও ক্রিয়েটর, ইউটিউব ভিডিও তাদের কাছে মাইক্রো জব Website গুলোর প্রয়োজনীয়তা অত্যাধিক। youtube ও facebook মনিটাইজেশনের জন্য কিছু ক্রাইটোরিয়া পূরণ করতে হয় যেগুলো মাইক্রো জব সাইটগুলো থেকে খুব সহজে কম দামে কিনে নেওয়া যায়।

আর আপনি চাইলে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি মাইক্রো Website তৈরি করে অনলাইন থেকে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন। মাইক্রো জব সাইটগুলো সাধারণত ছোট ছোট কাজ গুলো দিয়ে থাকে যেমন: ইউটিব সাবস্ক্রাইব, ফেসবুক ফলোয়ার, টিকটক ফলোয়ার, পোস্ট ভিউ, সাইনআপ, অ্যাপ ইন্সটল ইত্যাদি।

সার্ভিস সেল

আপনি চাইলে সার্ভিস সেলিং একটি Website তৈরি করে ইনকাম করতে পারেন। সার্ভিস সেল ওয়েবসাইটে আপনি ভিডিও, অডিও, ইমেজ, সংঙ্গীত, পিডিএপ ইত্যাদি বিক্রি করে আয় করতে পারবেন।

সাবস্ক্রিপশন

AI ওয়েবসাইট গুলো সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত আছি। কিভাবে একটা AI Website (Chatgpt, Midjourney, Voice. io) অনেক বড়বড় কাজকে মুহূর্তের মধ্যে করে দিচ্ছে। একটি AI Website ব্যবহার করে খুব সহজে কঠিন কাজ গুলো সম্পন্ন করা যায় বলে AI ওয়েবসাইট গুলোর ইউজার সংখ্যা অত্যাধিক।

কিন্তু আপনি কি জানেন ওয়ার্ল্ডের বড় বড় কোম্পানিগুলো কেন হাজার হাজার টাকা খরচ করে এইসব AI ওয়েবসাইট তৈরি করে? আপনি জানলে হয়তো অবাক হবেন, এসব Ai Website গুলোর মালিক একটি মাত্র ওয়েবসাইট থেকে মাসে লক্ষ লক্ষ ডলার ইনকাম করছে। আর তা হলো সাবস্ক্রাইব এর মাধ্যমে। তারা শুরুর দিকে মানুষদের ফ্রিতে সার্ভিস দিয়ে আসে। পরবর্তীতে যখন তাদের ওয়েবসাইটের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে যায় তখন তারা সেখানে সাবস্ক্রাইব সিস্টেম যুক্ত করে দেয়।

পরবর্তীতে আপনি যদি তাদের ওয়েবসাইট গুলো ব্যবহার করতে চান তাহলে মাসিক বা বাৎসরিক কিস্তিতে একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ  আপনাকে ইনভেস্ট করতে হবে। আর যেখান থেকে মূলত একজন ওয়েবসাইটের মালিক ইনকাম করে থাকে। আপনি চাইলে খুব কম টাকা ইনভেস্ট করে ছোট ছোট সার্ভিস ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে সাবস্ক্রাইপশন বসিয়ে ইনকাম করতে পারবেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম

আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে তাহলে আপনি সেখানে অ্যাফিলিয়েটং করে ও ইনকাম করতে পারবেন। অ্যাফিলিয়েটিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে ইতিপূর্বে আমাদের ওয়েবসাইটে বেশ কিছু আর্টিকেল পাবলিশ করা হয়েছে আপনি চাইলে সেখান থেকে অ্যাপ্লিটিং ও  ডিজিটাল মার্কেটিং  এর আইডিয়া নিতে পারেন।

আপনি একটি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে গুগল এডসেন্স থেকে ইনকামের পাশাপাশি অ্যাফিলিয়েটিং করেও আয় করতে পারেন। অ্যাফিলিয়েটিং হল অন্যের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করা অর্থাৎ আপনার ওয়েবসইটে Amazon, Ali Express, Theme forest প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল করে আয় করতে পারবেন।

রেফার করে ইনকাম

আপনি চাইলেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে রেফারেল লিংক যুক্ত করেও আয় করতে পারবেন। রেফার অর্থ হলো অন্যকে প্রমোট বা ইমপ্রেস করার মাধ্যমে কোন ফ্রি বা পেইড প্রডাক্ট বা সার্ভিস সেল করা। এটিও অ্যাফিলিয়েটিয়ের মতোই একটি সিস্টেম। যদিও এতে খুব সহজে ভালো রেফার বা ইনকাম করা যায়। এবং অ্যাফিলিয়েটিং এর মতো পেইড সার্ভিস সেল করতে হয় না।

আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ে আপনি বুঝতে পেরেছেন ওয়েবসাইট কি? কিভাবে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন এবং সেখান থেকে অনেক বেশি আয় করবেন। এরকম আরোও পোস্ট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইট।

আরো জানুনঃ

অন লাইনে টাকা ইনকাম ক্লিক করে।

কম দামে ইন্টারনেট অফার সকল অপারেটরে

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *