বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার খরচ ২০২৫। বিস্তারিত জানুন

শেয়ার করুন

স্বপ্ন কার না থাকে? আর সেই স্বপ্ন যদি হয় আমেরিকা যাওয়ার, তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার খরচ কেমন হবে, তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে। আপনিও নিশ্চয়ই ভাবছেন, কত টাকা লাগতে পারে, ভিসার খরচ কেমন, আর প্লেনের টিকিটই বা কত? এই ব্লগ পোস্টে আমি সবকিছু বিস্তারিত আলোচনা করব।

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার খরচ

আমেরিকা যেতে হলে ভিসার প্রয়োজন। তাই ভিসার প্রকারভেদ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। কারণ, ভিসার ধরনের ওপর নির্ভর করে আপনার খরচ ভিন্ন হতে পারে।

ভিসার প্রকারভেদ

  • ভিসিট ভিসা (B1/B2): এটি মূলত ট্যুরিস্ট ভিসা। আমেরিকা ভ্রমণের জন্য এই ভিসা প্রয়োজন হয়। ব্যবসায়িক কারণেও এই ভিসা ব্যবহার করা যায়।
  • স্টুডেন্ট ভিসা (F1): যারা আমেরিকাতে পড়াশোনা করতে যেতে চান, তাদের জন্য এই ভিসা।
  • ওয়ার্ক ভিসা (H1B): দক্ষ কর্মীরা এই ভিসার মাধ্যমে আমেরিকাতে কাজ করার সুযোগ পান।
  • ইমিগ্রান্ট ভিসা: যারা স্থায়ীভাবে আমেরিকাতে বসবাস করতে চান, তাদের জন্য এই ভিসা।

ভিসা ফি

ভিসার প্রকারভেদের ওপর ভিত্তি করে ফি ভিন্ন হয়। সাধারণত, ভিজিট ভিসার জন্য ১৬০ মার্কিন ডলার (প্রায় ২০,০০০ টাকা) লাগে। স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ টাকায় প্রায় ২০,০০০ টাকা খরচ হয়। তবে, ওয়ার্ক ভিসা বা ইমিগ্রান্ট ভিসার ফি বেশি হতে পারে।

প্লেনের টিকিটের খরচ

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার খরচ এ বিমান ভাডা কত”এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। প্লেনের টিকিটের দাম অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে, যেমন –বছর, ঋতু এবং এয়ারলাইন্স।

সাধারণত, ঢাকা থেকে আমেরিকার একমুখী (One-way) টিকিটের দাম ৭০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ২,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। রিটার্ন টিকিটের দাম সাধারণত ১,২০,০০০ টাকা থেকে ৩,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিটের দাম

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার খরচ এ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিটের দামে ভিন্নতা দেখা যায়। কিছু জনপ্রিয় এয়ারলাইন্স যেমন এমিরেটস, কাতার এয়ারওয়েজ, ইতিহাদ এয়ারওয়েজ এবং টার্কিশ এয়ারলাইন্স প্রায়শই বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে। এদের মধ্যে কাতার এয়ারওয়েজ এবং এমিরেটস একটু বেশি জনপ্রিয়।

এয়ারলাইন্স     আনুমানিক একমুখী ভাড়া (BDT)      আনুমানিক রিটার্ন ভাড়া (BDT)

  • এমিরেটস                   ৮০,০০০ – ১,৮০,০০০                 ১,৫০,০০০ – ৩,০০,০০০
  • কাতার এয়ারওয়েজ    ৭৫,০০০ – ১,৭০,০০০                ১,৪০,০০০ – ২,৮০,০০০

টিপস

  • কম খরচে টিকিট কাটার জন্য আগে থেকে টিকিট বুক করুন।
  • বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের অফার ও ডিসকাউন্ট সম্পর্কে খোঁজ রাখুন।
  • অফ সিজনে ভ্রমণের চেষ্টা করুন, কারণ তখন টিকিটের দাম তুলনামূলকভাবে কম থাকে।

অন্যান্য খরচ

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার খরচ এ ভিসা,প্লেনের টিকিট আর থাকা-খাওয়ার খরচ ছাড়াও আরও কিছু আনুষঙ্গিক খরচ রয়েছে, যা আপনার হিসেবে রাখা উচিত।

ট্রান্সপোর্টেশন

আমেরিকার শহরগুলোতে বাস, ট্রেন, এবং মেট্রোর ব্যবস্থা আছে। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করলে আপনার খরচ কম হবে। একটি মাসিক পাস কিনতে ৫০-১০০ ডলার(বাংলাদেশ টাকা ৬,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকা প্রায়) লাগতে পারে।

স্বাস্থ্য বীমা

আমেরিকায় স্বাস্থ্যসেবা অনেক ব্যয়বহুল। তাই, স্বাস্থ্য বীমা থাকা খুবই জরুরি। একটি ভালো স্বাস্থ্য বীমা পলিসি কিনতে মাসে ১৫০-৫০০ ডলার(১২,০০০ – ৬১,০০০ টাকা প্রায়) খরচ হতে পারে।যদি আপনি আমেরিকায় ১ মাসের জন্য থাকতে চান,তাহলে সব মিলিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা খরচ হবে।

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে কত সময় লাগে

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার খরচ জেনেছি। এবার যেতে সাধারণত ২০ থেকে ৩৫ ঘণ্টা সময় লাগে। এটি নির্ভর করে আপনি কোন রুটে যাচ্ছেন এবং কতগুলো স্থানে ট্রানজিট নিচ্ছেন তার ওপর। সাধারণত, মধ্যপ্রাচ্যের কোনো একটি শহরে (যেমন দুবাই, আবুধাবি, বা দোহা) অথবা ইউরোপের কোনো শহরে (যেমন ইস্তাম্বুল) ট্রানজিট নিতে হয়।

FAQs

প্রশ্নঃ স্টুডেন্ট ভিসার জন্য কী কী কাগজপত্র লাগে?

উত্তরঃ স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আপনার পাসপোর্ট, একাডেমিক সার্টিফিকেট, অ্যাডমিশন লেটার, আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণপত্র, এবং ভিসার আবেদনপত্র (DS-160) প্রয়োজন হবে।

প্রশ্নঃ ভিজিট ভিসার মেয়াদ কতদিন থাকে?

উত্তরঃ ভিজিট ভিসার মেয়াদ সাধারণত ৬ মাস থেকে ১০ বছর পর্যন্ত হতে পারে। তবে, এটি নির্ভর করে ভিসা অফিসারের সিদ্ধান্তের ওপর।

প্রশ্নঃ ওয়ার্ক ভিসার জন্য কীভাবে আবেদন করতে হয়?

উত্তরঃ ওয়ার্ক ভিসার জন্য প্রথমে আপনাকে কোনো আমেরিকান কোম্পানিতে চাকরির জন্য আবেদন করতে হবে। কোম্পানি আপনার পক্ষ থেকে ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (USCIS)-এ আবেদন করবে।

প্রশ্নঃ আমেরিকাতে কাজের সুযোগ কেমন?

উত্তরঃ আমেরিকায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে আইটি, ইঞ্জিনিয়ারিং, স্বাস্থ্যসেবা, এবং ব্যবসায়িক খাতে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

উপসংহার

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার খরচ একটি জটিল বিষয়, তবে সঠিক পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির মাধ্যমে আপনি আপনার স্বপ্নকে সত্যি করতে পারেন। ভিসা, প্লেনের টিকিট, থাকা-খাওয়া, এবং অন্যান্য খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আপনি একটি বাজেট তৈরি করতে পারবেন।

আরো জানুনঃ

ইউরোপের কোন দেশের টুরিস্ট ভিসা সহজে পাওয়া যায়

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *