ই পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ।

শেয়ার করুন

বিদেশ ভ্রমণ অথবা ব্যক্তিগত অর্থ লেনদেন কিংবা ব্যাংকিং একাউন্ট এর ক্ষেত্রে ই পাসপোর্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কিছুদিন আগেও যেখানে একটি পাসপোর্ট হাতে পেতে বছর খানেক সময় লেগে যেত। দালালের আশ্রয় নিতে হতো এবং অধিক অর্থ বিনিয়োগ করতে হতো। সেখানে আজ প্রযুক্তির আর্শীবাদে ই পাসপোর্ট করা খুবই সহজ হয়ে পেড়েছে।

এখন যে কেউ চাইলে ঘরে বসে হাতে থাকা ইন্টারনেট সংযুক্ত যেকোন স্মার্ট ডিভাইস/মোবাইল দিয়ে পাসপোর্ট ( Passport) এর আবেদন করতে পারেন। যেটি হাতে পেতে সর্বোচ্চ ৩ দিন থেকে ১ মাস সময় লাগে। সুধু তাই নয় পাসপোর্ট রিনিউ, পে বিল ইত্যাদি এখন ঘরে বসেই পরিশোধ করা সম্ভব।

ই পাসপোর্ট (E-Passport) কি?

ই পাসপোর্ট হলো ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট। ইন্টারনেট সংযুক্ত যেকোন স্মার্ট ডিভাইস দিয়ে বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে তৈরি করা যাবে পাসপোর্ট। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালু হয়।

এম আর পি এবং ই পাসপোর্টের মধ্যে পার্থক্য কি?

বাহিরে থেকে দেখতে ই পাসপোর্ট প্রচলিত পাসপোর্টের মতই তবে ভিতরে কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেমনঃ সাধারণ পাসপোর্টে প্রথমে দুটি পাতায় যে তথ্য গুলো থাকে পাসপোর্টে সেই তথ্য গুলো থাকবে না। কিন্তু এর পরিবর্তে সেখানে একটি কার্ড ও একটি অ্যান্টেনা থাকবে এই কার্ডের ভিতর থাকবে একটি চিপ। যেখানে পাসপোর্ট বাহকের ব্যক্তিগত যাবতীয় সব তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।

ই-পাসপোর্ট (E -Passport) এ সংরক্ষিত তথ্যঃ

  • পাসপোর্ট নাম্বার
  • পাসপোর্ট ধারীর নাম
  • জন্ম সাল
  • ৩ ধরণের ছবি
  • ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও
  • চোখের আইরিশ

এর মাধ্যমে যেকোন দেশের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ সহজে ভ্রমণকারীর সম্পর্কে সব তথ্য জানতে বা যাচাই করতে পারবে। সেই সঙ্গে মেশিনারেবল অপশন ও থাকছে ফলে ই-গেট না থাকলেও পাসপোর্ট ধারীর কোন সমস্যা হবে না। ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা সেটা স্ক্যান করে সার্ভারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এবং পাসপোর্ট সংবলিত সকল কাজ করতে পারবে।

ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম

চলুন এ পর্যায়ে জেনেনি কিভাবে ই পাসপোর্ট (E- Passport) এর জন্য অনলাইনে আবেদন করবেন। আবেদনের শুরুতে ওয়েবসাইটে দেখে নিতে পারেন পাসপোর্ট ( Passport) আবেদন করার ৫টি ধাপ। ওয়েবসাইটে বাংলা ও ইংরেজি করার সুবিধা আছে।

ই পাসপোর্ট (E- Passport) এর আবেদন করার জন্য প্রথমে এই ঠিকানায় চলে আসনু। তারপর উপরের ডান পাশে  পাসপোর্ট (Passport) অপশন দেখতে পাবেন। সেখান থেকে আবেদন শুরু করতে পারেন।

ই-পাসপোর্টের আবদেন onlinesheba24.com

শুরুতে অনলাইনে পাসপোর্ট (Passport) এর আবেদন নতুন অথবা রি-ইস্যু অপশন পাওয়া যাবে সেখানে ক্লিক করে সরাসরি আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে।

১ম ধাপঃ এই পর্যায়ে আপনার এলাকায় পাসপোর্ট (Passport) আছে কিনা সেটি চেক করতে হবে। চেক করার জন্য আপনার দেশ, এড্রেস, প্রেজেন্ট অ্যাড্রেস ইত্যাদি তথ্য দিয়ে নিন্মের ফরমটি পূরণ করুন। পূরণ করা শেষে Continue অপশনে ক্লিক করুন।

২য় ধাপঃ আপনার ইমেল এড্রেস দিয়ে I am not robot সিলেক্ট করে Continue তে ক্লিক করুন।

তারপর নিম্নে আপনার ফোন নাম্বারটি দিয়ে আবারও I am not robot ক্যাপসার টি যাচাই করে Create account অপশনে ক্লিক করুন।

৩য় ধাপঃ আপনাকে একটি জটিল পাসওয়ার্ড বসাতে হবে এবং আপনার NID বা জন্ম সনদ অনুযায়ী নিম্মের তথ্য গুলো যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। সব তথ্য সঠিকভাবে বসিয়ে Create account অপশনে ক্লিক করুন।

এ পর্যায়ে আপনার ইমেইল ভেরিফিকেশন করতে হবে। ইমেইল ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনার দেওয়া প্রদত্ত ইমেইলটি ওপেন করুন। সেখানে পাসপোর্ট সার্ভার থেকে পাঠানো একটি মেইল পাবেন। মেইলটির Click Here অপশনে ক্লিক করলে ইমেইল ভেরিফিকেশনের কাজটি সম্পন্ন হবে।

৪র্থ ধাপঃ আপনাকে সাইটে Sign In করতে হবে। Sign In করতে সাইন ইন অপশনে ক্লিক করুন। তারপর আপনার ইমেইল এড্রেস ও পাসওয়ার্ড দিয়ে I am not robot সিলেক্ট করে Sign in এ ক্লিক করুন।

আপনি যদি সবগুলো তথ্য পূরণ করে এ পর্যন্ত আসতে পারেন তাহলে আপনাকে Congratulation! কারণ আপনার একাউন্ট তৈরি করার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

আরো পড়ুনঃ অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম বা জন্ম নিবন্ধনের অবস্থা যাচাই ।

ই পাসপোর্ট (E- Passport) বহনকারী ব্যক্তির সুবিধা

১/ পাসপোর্ট (Passport) ধারী ব্যক্তি দ্রুত ও সহজে যাতায়াত করতে পারবে।

২/ ই-গেটের নির্দিষ্ট স্থানে পাসপোর্ট রেখে দাঁড়ালে ক্যামেরা ছবি তুলে নিবে। থাকবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাইয়ের ব্যবস্থাও সব ঠিক থাকলে এই-পাসপোর্ট ধারী ব্যক্তি ইমিগ্রেশন পেরিয়ে চলে যেতে পারবেন খুব দ্রুত । তবে কোন গরমিল থাকলে জ্বলে উঠবে লাল বাতি। সেক্ষেত্রে সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তারা হস্তক্ষেপ করবে।

পাসপোর্ট (Passport) দুই ধরনের, ৪৮ পাতার এবং ৬৪ পাতার। সাধারণ, জরুরী এবং অতি জরুরী এই তিন ধরনের পাসপোর্ট এর জন্য তিন রকম ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। দুই দিনের মধ্যেও আপনি আপনার পাসপোর্ট (Passport) পেতে পারেন। তবে তার জন্য আপনাকে Fees গুনতে হবে একটু বেশি।

ই পাসপোর্ট ওয়েবসাইট এর ঠিকানাঃ

আপনি যদি ই পাসপোর্ট তৈরি করতে চান তাহলে যে ঠিকানায় ঢুকতে হবে তার ঠিকানা হলো https://www.epassport.gov.bd । আপনি যেকোন একটি ব্রাউজার ওপেন করে এড্রেস বারে এই ঠিকানা লিখে ইন্টার বাটনে ক্লিক করে সাইটে ঢুকতে পারবেন।

ই পাসপোর্ট তৈরিতে খরচ কত?

  • পাঁচ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার পাসপোর্ট (Passport) এর জন্য রেগুলার বা সাধারণ ডেলিভারি ৬৩২৫  টাকা
  • এক্সপ্রেস বা জরুরী ডেলিভারির জন্য ৮৬২৫ টাকা।
  • সুপার এক্সপ্রেস বা অতি জরুরী পাসপোর্ট এর জন্য ১২৭৫০ টাকা
  • ১০ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার ই-পাসপোর্ট এর জন্য সাধারণ বা রেগুলার ডেলিভারি ৮০৫০ টাকা।
  • এক্সপ্রেস বা জরুরী ডেলিভারির জন্য খরচ ১০৩৫০ টাকা।
  • সুপার এক্সপ্রেস বা অতি জরুরী ডেলিভারি ১৩৮০০টাকা।

আরো জানুনঃ ঝামেলা ছাড়াই NID কার্ডের ভুল সংশোধন করুন।

নতুন ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদনঃ

আপনার একাউন্ট খোলার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন আপনি চাইলে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন দাখিল করতে পারেন। আবেদন শুরু করতে Apply for a new e- Passport অপশনে ক্লিক করুন এবং NID অথবা জন্ম সনদ অনুযায়ী সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফিলআপ করে এগিয়ে যান এবং পাসপোর্ট (Passport) এর আবেদন সম্পন্ন করুন।

ই পাসপোর্ট (E- Passport) সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলীঃ

ই পাসপোর্ট (E- Passport) এর আবেদনপত্র জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা জন্ম সনদ অনুযায়ী পূরণ করতে হবে।

১৮ বছরের কম বয়সী আবেদনকারী যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তাদের ক্ষেত্রে পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর অব্যশই উল্লেখ করতে হবে।

পাসপোর্ট (Passport) এর আবেদন পত্র অনলাইনে অথবা PDF ডাউন-লোড করে পূরণ করা যাবে। এতে কোন ধরনের ছবি বা কাগজপত্র সত্যায়িত করার প্রয়োজন নেই।

প্রাপ্ত বয়ষ্কদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র এবং অপ্রাপ্তবয়ষ্কদের ক্ষেত্রে জন্ম সনদ সহ বাবা-মায়ের NID কপি বাধ্যতামূলক।

সবগুলো ধাপ মেনে পাসপোর্ট (Passport) এর জন্য কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর আপনি জানতে পারবেন পাসপোর্ট (Passport) পোর্টালের স্ট্যাটাস চেক অপশনে।

জন্ম তারিখ এবং আবেদনের ক্রমিক সংখ্যা দিয়ে সার্চ অপশনে ক্লিক করলে আপনার অনলাইন পোর্টাল একাউন্ট থেকে আপনার সব আবেদনের অবস্থা দেখতে পাবেন।

অনলাইন আবেদন সম্পন্ন হলে SMS এর মাধ্যমে আপনার প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে পরবর্তী সাক্ষাৎকারের তারিখ চলে আসবে। ঐ তারিখে আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ছবি তুলতে হবে এবং বায়োমেট্রিক্স তথ্য প্রদান করতে হবে।

এরপর আপনার পাসপোর্ট (Passport) রেডি হয়ে গেলে মোবাইল SMS মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে। পরবর্তীতে যেখানে আপনি আবেদন জমা দিয়েছেন সেখান থেকে আপনে সংগ্রহ করতে পারবেন আপনার পাসপোর্ট (Passport)।

এরকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে ধন্যবাদ।

আরো পড়ুনঃ

16445 পাসপোর্ট চেক ১ মিনিটে।

গ্রামীন এমবি অফার কম দামে।

 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *