দালাল ছাড়াই ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন করুন সহজে।

শেয়ার করুন

ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন করে নেয়া অত্যন্ত জরুরী। বিভিন্ন প্রয়োজনে আমরা ই-পাসপোর্ট করে থাকি। বিদেশ যাওয়া থেকে শুরু করে ব্যাংক একাউন্ট তৈরি অথবা অনলাইন পেমেন্ট এর ক্ষেত্রে ই-পাসপোর্ট অপরিহার্য। কিন্তু মাঝেমধ্যে আমাদের অজান্তেই ই-পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে আমরা তথ্যের গরমিল করে থাকি।

যেমন: নিজের নাম, বয়স, ঠিকান অথবা পিতা-মাতা নামের বানান বা তথ্যের ভুল ইত্যাদি। যার কারণে পরিবর্তীতে পড়তে হয় নানা জটিলতায়। তাই আসুন আজ আমরা দেখব কিভাবে দালাল ছাড়াই ই-পাসপোর্টের ভুল সংশোধন করা যায়। চলুন শুরু করি….

মনে রাখবেনঃ ই-পাসপোর্ট সংক্রান্ত সর্বশেষ আপডেটে জানা যায় যে পাসপোর্টধারী ব্যক্তি NID তথ্য অনুযায়ী পাসপোর্টের যেকোন ধরণের তথ্য সংশোধন করতে পারবেন। কিন্তু  NID এর তথ্য ছাড়া অন্যকোন তথ্য পরিবর্তন করতে পারবেন না। অর্থাৎ ধরুন আপনার পাসপোর্টের বয়স ৩০ কিন্তু NID তে ৩২ এই ক্ষেত্রে আপনি ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন করে ৩২ বছর করতে পারবেন। কিন্তু আপনি চাইলে NID তথ্যের বাহিরে গিয়ে অর্থাৎ ৩২ থেকে ৩৫ করতে পারবেন না।

ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন করার নিয়ম।

ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন করতে প্রথমে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট সহয়তা সার্ভিসের নিজেস্ব ওয়েব সাইটে চলে আসুন। তারপর প্রথম অপশন Apply online for e-passport অপশনে ক্লিক করুন।

১ম ধাপেঃ আপনার জাতীয়তা, বিভাগ ও থানা নির্বাচণ করুন এবং Continue বাটনে ক্লিক করুন।

২য় ধাপেঃ আপনার একটি একটিভ জিমেই এড্রেস দিয়ে I’m human ক্যাপসা ফিলআপ করে Continue বাটনে ক্লিক করুন।

৩য় ধাপেঃ আপনার ব্যক্তিগত কিছু তথ্য দিতে হবে যেমনঃ একটি Strong পাসওয়ার্ড, Given name, surname ও একটি সচল মোবাইল নাম্বার। সব গুলো তথ্য দেওয়ার পর I am human ক্যাপসা সিলেক্ট করে Create account বাটনে ক্লিক করুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন করতে উপরিউক্ত তথ্যগুলো অব্যশ্যই আপনার NID তথ্য অনুযায়ী দিবেন এবং কারো পাসপোর্টে যদি নামের বানান ভুল থাকে তাহলে এই ধাপে Given name ও Surname এ সেই ভুল তথ্য সংশোধন করে সঠিক তথ্য বসিয়ে দিবেন। তাহলে সংশোধনীয় তথ্য আসার সময় সেই তথ্য সংশোধন হয়ে আসবে।

৪র্থ ধাপঃ এই ধাপে আপনার দেওয়া জিমেইলটি একটিভ করতে হবে। জিমেইলটি একটিভ করতে আপনার জিমেইল অ্যাপের Inbox অথবা Spam অপশন চেক করুন।

ই-মেইলটি একটিভ হওয়ার পর Sign In অপশনে ক্লিক করে আপনার জিমেইল ও পাসওয়ার্ডটি দিয়ে Sign In করে নিন।

সবগুলো পদক্ষেপ সঠিকভাবে করা হলে আপনার একাউন্টটি সফলভাবে তৈরি হয়ে যাবে ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন করতে আপনি Apply for a new passport অপশন দেখতে পাবেন। এখন অনেকে মনে করবেন আপনার তো ইতিমধ্যে একটি পাসপোর্ট রয়েছে তাহলে নতুন করে পাসপোর্ট তৈরি করার কি ধরকার?

তাদের জেনে রাখা উচিত যে আপনি যদি কোন তথ্য সংশোধন করেন তখন আপনাকে নতুন একটি সংশোধনীয় পাসপোর্ট দেওয়া হবে। তাই Apply for a new passport অপশনে ক্লিক করে আপনার কার্যক্রম চালিয়ে যান।

আরো পড়ুনঃ  অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ।

৫ম ধাপঃ ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন এ ধাপে আপনার সামনে পাসপোর্টের ধরণ নির্বাচণ করতে হবে যেমনঃ

  • Ordinary passport
  • Official passport

আপনি যদি সরকারি একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হয়ে থাকেন তাহলে আপনার পাসপোর্টের ধরণ হবে অফিসিয়াল। আর আপনি যদি একজন সাধারণ নাগরিক বা কর্মচারী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার পাসপোর্টের ধরণ হবে অর্ডিনারি পাসপোর্ট। তারপর Save and continue বাটনে ক্লিক করুন।

৬ষ্ঠ ধাপঃ এ পর্যায়ে আপনাকে আরোও কিছু ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে যেমন ধরুন:

  • লিঙ্গ
  • পেশা
  • ধর্ম
  • কান্ট্রি কোড
  • মোবাইল নাম্বার
  • বিভাগ
  • জন্ম সাল (NID অনুযায়ী) ও
  • নাগরিকত্বের ধরণ

কারো যদি বয়সে সমস্যা থাকে এবং সেটি সংশোধন করতে চান তাহলে এখানে সঠিক তথ্যটি বসিয়ে নিন। সবগুলো তথ্য সঠিকভাবে বসানো হলে Save and continue বাটনে ক্লিক করুন।

৭ম ধাপেঃ আপনার স্থানীয় ও বর্তমান ঠিকানা নির্বাচণ করুন। যে সকল তথ্য দিতে হবে তা হলঃ

  • বিভাগ
  • জেলা
  • থানা
  • রাস্তা বা সড়ক নাম্বার (Optional)
  • গ্রাম
  • পোস্ট অফিস ও
  • পোস্টাল কোড ইত্যাদি

সব গুলো তথ্য দিয়ে আবারও Save and continue বাটনে ক্লিক করুন।

৮ম ধাপঃ ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন এই ধাপে আপনি কি নতুন পাসপোর্টধারী নাকি পুরনো সেটি সিলেক্ট করতে হবে। যেহেতু আমাদের কাছে ইতিমধ্যে পাসপোর্ট রয়েছে এবং আমরা সেই তথ্য সংশোধন করতে চাই তাই আমাদের পাসপোর্টের ধরণ নির্বাচণ করতে হবে। নতুন করে আবেদন করার প্রয়োজন হবে না। এখন আপনি পাসপোর্টের ধরণ হিসেবে ৩ ধরণের Passport type দেখতে পাবেন।

  • MRP passport
  • ePP passport
  • Don’t have any passport

এখন আপনার কাছে যে ধরণের পাসপোর্ট রয়েছে সেটি সিলেক্ট করুন। তারপর একটু নিচে থেকে আপনি কেন পাসপোর্ট রিকোয়েস্ট করবেন সেটি সিলেক্ট করুন। আপনি যেহেতু পাসপোর্ট সংশোধন করতে চাচ্ছেন সেই ক্ষেত্রে DATA CHANGE অপশনটি সিলেক্ট করুন। এরপর পাসপোর্ট নাম্বার, ইস্যু ডেট ও জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার দিয়ে Save and continue বাটনে ক্লিক করুন।

৯ম ধাপেঃ ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন এর এই ধাপে আপনার পিতা-মাতার নাম, পেশা ও ন্যাশনালিটি তথ্য দিন। যারা পাসপোর্টে পিতা মাতার নাম সংশোধন করতে চাচ্ছেন তারা এই ধাপে NID অনুসারে সংশোধিত তথ্য দিয়ে Save and continue তে ক্লিক করুন।

১০ম ধাপ: এই ধাপে আপনার বৈবাহিক স্ট্যাটাস দিতে হবে। অর্থাৎ আপনি অবিবাহিত হলে অবিবাহিত এবং বিবাহিত হলে আপনার স্ত্রীর তথ্য দিয়ে Save and continue বাটনে ক্লিক করুন।

১১ তম ধাপঃ জরুরি কান্টাক্ট ইনফরমেশন তথ্য। অর্থাৎ যেকোন প্রয়োজনে আপনি ছাড়াও অন্য কোন ব্যক্তির সাথে পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ে যোগাযোগ করা যাবে। তার নাম, ঠিকানা ও নাম্বার দিন এবং Save and continue তে ক্লিক করুন।

আরো জানুনঃ  MRP থেকে ই-পাসপোর্ট রিনিউ বা নবায়ন তথ্য

১২ তম ধাপঃ ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন এর এই ধাপে পাসপোর্ট অপশন সিলেক্ট করতে হবে। অর্থাৎ আপনি কত বছরের জন্য কত পাতার পাসপোর্ট নিতে চাচ্ছেন সেটি বেছে নিন। তারপর Save and continue ক্লিক করুন।

১৩ তম ধাপঃ ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন এই ধাপে আপনার পাসপোর্টের ডেলিভারি টাইম সিলেক্ট করুন। অর্থাৎ আপনি রেগুলার ডেলিভারি চাচ্ছেন নাকি ইর্মাজেন্সি ডেলিভারি সেটি বেছে নিন এবং নিচে থেকে সিডিউল টাইম অর্থাৎ আপনি কত তারিখে গিয়ে আপনার কাগজপত্র জমা দিবেন সেটি সিলেক্ট করুন এবং Save and continue বাটনে ক্লিক করুন।

১৪ তম ধাপঃ এই ধাপে আপনার দেওয়া সকল তথ্য আপনার সম্মুখে আরোও একবার প্রদর্শিত হবে। সবগুলো তথ্য ভালো করে চেক করে নিন। যদি কোন তথ্য ভুল দেখেন তাহলে Edit অপশনে ক্লিক করে সেটি পরিবর্তন করে নিন। আর সবগুলো তথ্য ঠিক থাকলে Confirm বাটনে ক্লিক করুন।

দালাল ছাড়াই ই-পাসপোর্টের ভুল সংশোধন Onlinesheba24

১৫ তম ধাপঃ ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন করতে এই পর্বে আপনার পেমেন্ট হিস্টোরি ও গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন শো করবে। একটু নিচে গেলে আপনি দেখতে পারবেন কোন কোন ব্যাংক থেকে পেমেন্ট করা যাবে।  সবগুলো তথ্য রিভিউ করার পর Continue তে ক্লিক করুন।

Continue তে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনার অ্যাপ্লিকেশনটি সঠিকভাবে সাবমিট হয়ে যাবে। এখন একটু নিচে থেকে আপনার print summary ও application from গুলো সেভ ও ডাউনলোড করে নিন। তারপর নিকটস্থ কম্পিউটার দোকান থেকে তথ্য দুটি প্রিন্ট করে নিন এবং যেই দিন আপনার সিডিউল টাইম নির্ধারণ করেছেন ঐ দিন এ দুটি ডকুমেন্ট সহ সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হবেন।

ই-পাসপোর্ট ভুল সংশোধন করতে যে যে ডকুমেন্ট লাগবে

  • বর্তমান পাসপোর্ট
  • NID Card
  • ব্যাংক পেমেন্ট রশিদ
  • Print summary
  • application form
  • অঙ্গীকারনামা

ই-পাসপোর্টের ভুল সংশোধনের সহজ নিয়ম।Onlinesheba24

কিভাবে অঙ্গীকারনামা পাবেন?

মোবাইলের যেকোন ব্রাউজারে এসে সার্চ অপশনে লিখুন (পাসপোর্ট আবেদনের অঙ্গীকারনামা ) এবং সার্চ করুন। তারপর ২ নাম্বারের ওয়েবসাইট এ  ঢুকে পাসপোর্টের আবেদনের অঙ্গীকারনামা অপশনে ক্লিক করে পিডিএফ কপিটি ডাউনলোড করে নিন। তারপর ফর্মটি প্রিন্ট করে সব তথ্য পূরণ করে। উপরি উক্ত বর্ণিত সকল কাগজপত্র নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে জমা করুন।

 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *