ই টিন সার্টিফিকেট তৈরি করুন ২ মিনিটে। E TIN Certificate
অনলাইনে ই টিন সার্টিফিকেট তৈরি করা সহজ। দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে যে কারো প্রয়োজন হতে পারে ই-টিন (E-tin)সার্টিফিকেট । অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে ই-টিন (E-tin) কি? E-Tin কাদের জন্য প্রয়োজন? ই-টিন (E-tin) এর সঠিক ব্যবহার, কোন কোন কাজে E-Tin) প্রয়োজন হতে পারে? অনলাইনে ই টিন সার্টিফিকেট তৈরি করার নিয়ম কি? E-Tin তৈরি করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে? ইত্যাদি। আজকের পোস্টে আমরা E-Tin সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। তো চলুন শুরু করি।
ই টিন (E-tin) কি?
E-tin হলো ইনকাম ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার। অর্থাৎ ব্যক্তিগত আয়কর কর্মসূচি। এটি হলো আয়কর নিবন্ধনের নতুন সংস্করণ। বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন হতে পারে টিন সার্টিফিকেট যেমনঃ
- সরকারি সেবা
- আয়কর পরিশোধ
- ব্যাংকিং লোন
- জমি ক্রয় বিক্রয়
- গাড়ির মালিক
- ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড পেতে
- কোম্পানি শিয়ার ক্রয়
- পণ্য আমদানি বা রপ্তানি
- ফ্রিল্যান্সিং
- ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন। ইত্যাদি।
ই টিন সার্টিফিকেট (E-tin) কাদের প্রয়োজন ?
সরকারি বা বেসরকারি প্রাতিষ্ঠানিক সেবা পেতে কিংবা ব্যাকিং প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক লোন নিতে ই টিন সার্টিফিকেট থাকা জরুরি। এছাড়াও আপনার ব্যক্তিগত সম্পত্তির সরকারি খাজনা বা কর পরিশোধ করতে ই-টিন (E-tin) প্রয়োজন হবে।
আরোও পড়ুনঃ– অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ।
আরো বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ই টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন হতে পারে যেমন: গাড়ির মালিক হতে চাইলে, ব্যাংক থেকে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড নিতে, বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি বা রপ্তানি করতে, কোম্পানির শিয়ার পার্টনার হতে, অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স নিবন্ধন করতে অনলাইনে ই-টিন (E-tin) সার্টিফিকেট প্রয়োজন।
অনলাইনে ই টিন সার্টিফিকেট তৈরি করার নিয়ম
অনলাইনে ই টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে প্রথমে চলে আসুন এই ঠিকানায়। লিংকে ক্লিক করার পর আপনাকে সরাসরি ই-টিন (E-tin) এর অফিসিয়াল অয়েবসাইটে নিয়ে আসা হবে। এখন সাইটের উপরের মেনুবার থেকে Register option এ ক্লিক করুন।
১ম ধাপঃ অনলাইনে ই টিন এ এই ধাপে আপনাকে ব্যক্তিগত প্রথমিক কিছু তথ্য দিতে হবে। যেমনঃ-
- ইউজার আইডি
- পাসওয়ার্ড
- রিটাইপ পাসওয়ার্ড
- সিকিউরিটি কোশ্চেন
- সিকিউরিটি এনসার
- কান্ট্রি
- মোবাইল নাম্বার ও
- ইমেইল এড্রেস
সব গুলো তথ্য সঠিকভাবে দেওয়ার পর একটু নিচে গেলে একটি ক্যাপসা দেখতে পাবেন। ক্যাপসাটি সঠিকভাবে পূরণ করে Register বাটনে ক্লিক করুন।
২য় ধাপঃ মোবাইল একটিভেশন। এই ধাপে আপনার দেওয়া প্রদত্ত নাম্বারে ই-টিন (E-tin) একটিভেশন করার জন্য একটি কোড পাঠানো হবে। কোডটি কপি করে একটিভেশন ঘরে বসিয়ে Active অপশনে ক্লিক করুন। আপনার কোডটি সঠিক থাকলে আপনার E-Tin একাউন্টি রেজিস্টেশন সম্পন্ন হয়ে যাবে।
৩য় ধাপঃ এবার আবারও মেনুবার থেকে লগিং অপশনে ক্লিক করে আপনার ইউজার আইডিও পাসওয়ার্ড দিয়ে Login করে নিন।
৪র্থ ধাপঃ এখন আপনাকে যেই পেইজ এ নিয়ে আসা হবে সেখান থেকে একটু নিচে গেলে Click here একটি অপশন পাবেন সেখানে ক্লিক করুন।
এ পর্যায়ে আপনাকে টিন সার্টিফিকেট রেজিস্টেশন করতে হবে। টিন সার্টিফিকেট রেজিস্টেশন করতে তাদের দেওয়া ফর্মটি সঠিকভাবে পূরণ করে নিন। ফর্ম পূরণের সময় অব্যশই NID ( জাতিয় পরিচয়পত্র ) তথ্য অনুযায়ী পূরণ করুন। কেননা আপনি জীবনে সুধু একবারেই টিন সার্টিফিকেট তৈরি সুযোগ পাবেন। তাই অব্যশই কোন ধরণের জালিয়াতি বা ভুল তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।
ফর্মে আপনি অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন যেগুলো প্রত্যেকটা সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে যেমন:
- কর দাতার ধরণ
- রেজিস্টেশনের ধরণ
- আয়ের প্রধান উৎস
- লোকেশন
- ব্যবসার ধরন ও
- স্থায়ী এড্রেস
উপরে প্রত্যেকটি অপশনে আপনার জন্য প্রযোজ্য অপশন গুলো সঠিকভাবে সিলেক্ট করা হয়ে গেলে Go to next বাটনে ক্লিক করুন।
৫ম ধাপঃ অনলাইনেই টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে এই ধাপে আপনার ব্যক্তিগত সকল বেসিক তথ্য NID অনুযায়ী পূরণ করতে হবে। যে যে তথ্য গুলো পূরণ করতে হবে তা হলোঃ-
- কর দাতার নাম
- NID নাম্বার
- কর দাতার লিঙ্গ
- জন্ম তারিখ
- পিতা-মাতার নাম
- স্বামী বা স্ত্রীর নাম
- ইমেইল
- এড্রেস
- মোবাইল নং
- বর্তমান ঠিকানা ইত্যাদি
সব গুলো তথ্য পূরণের পর Go to next বাটনে ক্লিক করুন।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে ভূমিকর পরিশোধের নতুন নিয়ম ও পেমেন্ট রশিদ সংগ্রহ
৬ষ্ঠ ধাপঃ অনলাইনে ই টিন সার্টিফিকেট তৈরির এই ধাপে আপনার দেওয়া সকল তথ্য আবারও একবার আপনার সামনে প্রদর্শিত হবে। সব তথ্য ভালো করে চেক করে নিন। কোথাও ভুল থাকলে ব্যাকে গিয়ে সংশোধন করে নিতে পারবেন। আর যদি সব তথ্য ঠিক থাকে তাহলে Submit application এ ক্লিক করুন।
আপনার দেওয়া তথ্য গুলো সঠিক থাকলে সকল ইনফরমেশনের শেষে আপনার NID ছবিটি দেখতে পাবেন। তারপর একটু নিচে থেকে View Certificate অপশনে ক্লিক করলে আপনারই টিন সার্টিফিকেট টি দেখতে পাবেন।
এখন আপনি এই ই টিন সার্টিফিকেট দিয়ে যেকোন ধরণের কাজ করতে পারবেন। আশা করি বুঝতে পারছেন কিভাবে খুব সহজে ও দ্রুততম সময়ে একটি অনলাইন ই-টিন (E-tin) সার্টিফিকেট তৈরি করা যায়।এছাড়া টিন সার্টিফিকেট তৈরী করার পর আপনাকে অবশ্যই প্রতিবছর রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
রিটার্ন দাখিল আপনি দুই ভাবে করতে পারবেন। সরাসরি আয়কর অফিসে যেয়ে অথবা অনলাইনের মাধ্যমে।সুতরাং টিন খোলার পর মনে রাখতে হবে যে, আপনাকে প্রতি বছর রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
ই টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে যা যা লাগবে
- কর দাতার নাম।
- NID নাম্বার/ স্মার্ট কার্ড নাম্বার ।
- কর দাতার লিঙ্গ।
- জন্ম তারিখ এনআইডি অনুযায়ী।
- পিতা-মাতার নাম।
- স্বামী বা স্ত্রীর নাম।
- ইমেইল এড্রেস।
- মোবাইল নং।
- বর্তমান ঠিকানা ইত্যাদি।
ই টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে কত টাকা লাগে?
ই টিন সার্টিফিকেট তৈরী করতে কোন প্রকার ফি লাগে না। আপনি উপরের নিয়ম মেনে সার্টিফিকেট তৈরি করে প্রিন্টার থাকলে নিজেই প্রিন্ট করে নিতে পারেন। আর নিজের প্রিন্টার না থাকলে নিকটবর্তী কোন দোকান থেকে ১০ টাকা দিয়ে প্রিন্ট করে নিতে পারেন।
আশাকরি, কিভাবে ই টিন সার্টিফিকেট তৈরী করবেন সেটা জানতে পেরেছেন। এরকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে চোখ রাখুন Onlinesheba24 ডট কম ওয়েবসাইটে ধন্যবাদ।